পাঠক অরণ্য সৌভিক মনে করেন, পর্নো দেখাটা শুধু বয়সের ব্যাপার৷ তাঁর নিজের বয়স ৩০ থেকে ৩৫-এর মধ্যে৷ তিনি ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায় লিখেছেন, ‘‘আমি বা আমার সমবয়সি বন্ধু-বান্ধব কেউ আর পর্নো দেখতে আগ্রহী নই৷ আমরা মনে করি, আমাদের ঐ বয়স পার হয়ে গেছে৷ তবে হ্যাঁ, এটা সত্যি যে আমরা সবাই একবার হলেও পর্নো ছবি দেখেছি৷''
পাঠক ওমর ফারুকের ধারণা, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি পর্নো দেখে ১২ থেকে ২০ বয়সিরা৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘ওরা দোকান থেকে ১০ টাকায় এক জিবি....এনে সারারাত ধরে দেখে৷''
পুরনো বন্ধু এমএ বারিক অরণ্যর সাথে পুরোপুরি একমত৷ তিনি মনে করেন, এই যুগে এটা একটা স্বাভাবিক ব্যাপার৷
-
বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফি: শুরু থেকে বিস্তার
দেশি চটি বই থেকে বিদেশি ‘প্লেবয়’
একটা সময় পর্যন্ত ঢাকায় তো বটেই, দেশের প্রায় সব মফঃস্বল শহরেও গোপনে বিক্রি হতো ‘চটি বই’৷ আদিরসাত্মক গল্পের সেই বইগুলো লেখা হতো ছদ্মনামে৷ চটি বইয়ের বাইরে ‘জলসা’, ‘নাট্যরাজ-’এর মতো নিরীহ নামের কিছু ‘পিনআপ’ ম্যাগাজিনও ছিল, যেগুলো প্রকাশের উদ্দেশ্যই ছিল নারীদেহ এবং যৌনকর্মের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা দিয়ে পাঠক মনে যৌন উদ্দীপনা জাগানো৷ এছাড়া বড় শহরগুলোয় ‘প্লেবয়’ ম্যাগাজিনও পাওয়া যেত৷
-
বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফি: শুরু থেকে বিস্তার
ভিসিআরের হাত ধরে ‘ব্লু ফিল্ম’
ভিডিও ক্যাসেট রেকর্ডার, অর্থাৎ ভিসিআরের কয়েক বছর পর হয়ত কোনো চিহ্নই থাকবে না৷ গত বছরের জুনেজাপানে তৈরি হলো বিশ্বের সর্বশেষ ভিসিআর৷ মানে বিশ্বের কোথাও আর কখনো ভিসিআর তৈরি হবে না৷ বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফির বিস্তারে এই ভিসিআর একসময় খুব বড় ভূমিকা রেখেছে৷ প্রেক্ষাগৃহে না গিয়ে ঘরে বসে হিন্দি, ইংরেজি ছবি দেখা শুরু হয়েছিল ভিসিআর দিয়ে৷ একটি চক্র তখন নানা জায়গায় গোপনে ‘ব্লু ফিল্ম’-ও দেখাতে শুরু করে৷
-
বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফি: শুরু থেকে বিস্তার
সিনেমা হলে ‘কাটপিস’
দেশের কিছু প্রেক্ষাগৃহে হলিউডের মুভি দেখানো হতো৷ এক সময় ঘোষিত মুভির ফাঁকে ফাঁকে দেখানো শুরু হয় ‘ব্লু ফিল্ম’৷ এই প্রবণতা অন্য হলগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে৷ বাংলা ছবির ফাঁকে ফাঁকে দেখানো শুরু হয় ‘কাট পিস’, অর্থাৎ পর্নো ছবির অংশ বিশেষ৷
-
বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফি: শুরু থেকে বিস্তার
সিডি থেকে ডিভিডি
কম্পিউটারের আগমনের পর থেকে অল্প অল্প করে কমপ্যাক্ট ডিস্ক, অর্থাৎ সিডিতেও ঢুকে পড়ে পর্নো ছবি৷ সেই ছবি পৌঁছে যায় ঘরে ঘরে৷ সিডির পর এলো ডিজিটাল ভার্সেটাইল ডিস্ক, অর্থাৎ ডিভিডি৷ ভার্সেটাইল ডিস্ক দেশে জ্ঞান এবং সংস্কৃতির চর্চা ও বিকাশে নিঃসন্দেহে ‘ভার্সেটাইল’ ভূমিকাই রাখছে, তবে পাশাপাশি যে পর্নোগ্রাফির ধারক, বাহক হিসেবেও এর একটা পরিচিতি গড়ে উঠেছে তা-ও অস্কীকার করা যাবে না৷
-
বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফি: শুরু থেকে বিস্তার
অন্তর্জালে পর্নোজাল
গত কয়েক বছরে দেশে ইন্টারনেট ও তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার বিষ্ময়কর হারে বেড়েছে৷ সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬ দশমিক ৬৮ কোটি৷ ইন্টারনেটের অপব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে৷ পর্নোসাইটের দৌরাত্ম এত ভয়াবহভাবে যে, সম্প্রতি পর্নোগ্রাফি ও আপত্তিকর কন্টেন্ট প্রকাশ বন্ধের উদ্যোগ হিসেবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি) পাঁচশ’রও বেশি পর্নোসাইট বন্ধ করেছে৷
-
বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফি: শুরু থেকে বিস্তার
মোবাইল ফোনে পর্নোগ্রাফি
দেশের ৬ দশমিক ৬৮ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ৯৪ দশমিক ১৮ শতাংশই মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্রাউজ করে৷ ফলে মোবাইলই হয়ে উঠেছে পর্নোগ্রাফির সবচেয়ে বড় উৎস৷ হাতে হাতে মোবাইল, তাই পর্নোগ্রাফি ও আপত্তিকর কন্টেন্টও হয়ে উঠেছে সহজলভ্য৷
-
বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফি: শুরু থেকে বিস্তার
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক একবার জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন, ‘‘দেশে প্রতি ১২ সেকেন্ডে অন্তত একটি করে নতুন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলা হচ্ছে৷’’ নতুন অ্যাকাউন্টগুলোর উল্লেখযোগ্য একটি অংশই ‘ভুয়া’৷ এভাবে কিছু লোক ফেসবুক, টুইটারেও নানা ধরণের অপতৎপরতা চালাচ্ছে৷ এর ফলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও পর্নোগ্রাফির বিস্তার বাড়ছে৷
লেখক: আশীষ চক্রবর্ত্তী
পাঠক সেতুর মতে, এখন বড়রা পর্নো বিশেষ না দেখলেও ছোটরা পর্নোগ্রাফিতে বেশি ঝুঁকছে৷ তবে তিনি লক্ষ্য রেখেছেন যে, অনেক পর্নো ইন্টানেটসাইট এখন বেশ কিছুদিন থেকে বন্ধ৷ আর এ সম্পর্কে সেতুর মন্তব্য, ‘‘খুব ভালো হয়েছে বন্ধ করে৷''
পর্নো বিষয়ক লেখা বা এ বিষয়ে কথাবার্তা বলাটাই পাঠক পরিনীতা দাশের কাছে ভিতিকর৷ গৌতম বর্মনও পরিনীতার সাথে একমত প্রকাশ করেছেন৷
অন্যদিকে ডয়চে ভেলের পাঠক শেখ মনিরের কাছে পর্নো বিষয়ক কোনো আলোচনাই ভালো লাগে না, লাগেনি৷
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ
-
তথ্য গোপন রাখার সাতটি সহজ উপায়
পাসওয়ার্ড নিজের কাছে রাখুন
কম্পিউটার, স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটের পাসওয়ার্ড যেন কখনই এক না হয়৷ আর ব্যাংক কার্ড-এর সঙ্গে যেন এই পাসওয়ার্ডের মিল না থাকে৷ এছাড়া কম্পিউটার, স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটে কোনো পাসওয়ার্ড লিখে রাখবেন না৷ এর ফলে আপনার তথ্য চুরির সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়৷ বাড়ির বাইরে গেলে এগুলি ‘লক’ করে যাবেন৷
-
তথ্য গোপন রাখার সাতটি সহজ উপায়
নামে ‘গুগল অ্যালার্ট’ ব্যবহার করুন
এটা খুব সহজ পন্থা, আপনি যদি দেখতে চান ইন্টারনেটে আপনার সম্পর্কে সবাই কী বলছে৷ সোজা এই ঠিকানায় যান – http://www.google.com/alerts এবং আপনার নাম লিখুন৷ তারপর আপনার নামের বিভিন্ন ধরন লিখে, তার আগে ও পরে ‘কোটেশন মার্ক’ জুড়ে দিন৷
-
তথ্য গোপন রাখার সাতটি সহজ উপায়
ব্যবহারের পর লক্ষ্য রাখা
আপনি যদি অন্য কারো কম্পিউটার বা ট্যাবলেট ব্যবহার করেন, তবে একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ জিনিস লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন৷ আপনার পর যিনি সেটা ব্যবহার করবেন, তিনি যাতে আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে না পারে – সেটা খেয়াল রাখুন৷ আপনি যদি এটা করতে ভুলে যান, তাহলে ফলাফল ভয়াবহ হতে পারে৷
-
তথ্য গোপন রাখার সাতটি সহজ উপায়
ফোন, ই-মেল বা জিপ কোড ব্যবহার করতে না দেয়া
অচেনা কোনো মানুষ এই নম্বরগুলো জানতে চাইলে, আপনারা দেবেন না৷ দেখা যায় কোনো অফিস তাঁর কর্মীর কাছ থেকে এ সব তথ্য চাইলে, অনেকেই সেচ্ছ্বায় তা দিয়ে দেয়৷ বহু অফিস এ নিয়ে একটি প্রোফাইল তৈরি করে৷ আপনার কিন্তু এ সব তথ্য না দেয়ার অধিকার আছে৷ তাই আপনি যদি এতে স্বাচ্ছ্বন্দ্যবোধ না করেন, তবে দেবেন না৷
-
তথ্য গোপন রাখার সাতটি সহজ উপায়
কার্ড নয় ক্যাশ
আপনি যদি চান আপনি যে পণ্যটি কিনছেন, সেই কোম্পানি আপনারা পরিচয় না জানুক, তবে নগদ অর্থে জিনিস কিনুন৷
-
তথ্য গোপন রাখার সাতটি সহজ উপায়
ফেসবুকে নিরাপত্তার জন্য ‘ফ্রেন্ডস’ ব্যবহার করুন
ফেসবুকে সবসময় ‘সিকিউরিটি’ বা নিরাপত্তা পরীক্ষা করুন৷ পোস্ট করার পর লক্ষ্য রাখুন আপনি আপনার ছবি বা মন্তব্য ‘ফ্রেন্ডস’ করে রেখেছেন, নাকি ‘পাবলিক’ করেছেন৷ আপনি যদি ‘স্পেশ্যাল’ নির্বাচন করেন এবং ঠিক করে দেন কে কে আপনার পোস্ট দেখতে পাবে, তবে সেটা আপনার তথ্য নিরাপত্তার জন্য তুলনামূলকভাবে ভালো৷
-
তথ্য গোপন রাখার সাতটি সহজ উপায়
‘হিস্ট্রি’ এবং ‘কুকিস’ মুছে ফেলুন
আপনি সবশেষ কবে এটা করেছেন? আপনি যদি নিশ্চিত না হন, ব্রাউজারে গিয়ে এটা পরিবর্তন করুন৷ ব্রাউজারের ‘প্রাইভেসি সেটিংস’-এ যান, সেখানে ‘নেভার রিমেমবার হিস্ট্রি’ নির্বাচন করুন৷ এর ফলে ইন্টারনেটে আপনাকে ‘ট্র্যাক’ করাটা হ্যাকারদের জন্য কঠিন হবে৷ এছাড়া আপনি ‘অ্যাড অন’-ও ব্যবহার করতে পারেন৷
লেখক: অমৃতা পারভেজ