‘‘রোনাল্ডো রেয়াল মাদ্রিদে ছেড়ে এখন ইউভেন্টুসের৷ এই খবরটা আমি টোটালি নিতে পারছি না৷ রোনাল্ডো ছাড়া রেয়াল মাদ্রিদ! এটা ভাবি কী করে?'' ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায় এই মন্তব্য পাঠক ইয়াসির আরাফাতের৷ কীভাবে তিনি রোনাল্ডোর ভক্ত হলেন, সে গল্পও তুলে ধরেছেন এভাবে, ‘‘আমি কখনো রেয়াল মাদ্রিদ ফ্যান ছিলাম না৷ আমি কখনো রোনাল্ডো ফ্যান ছিলাম না৷ আমি শুধু খেলা দেখতাম৷ বিশেষ করে স্প্যানিশ লিগের খেলা৷ কারণ মিডিয়া স্প্যানিশ লিগের খবর একটু বেশিই দিত৷ সেই কারণেই স্প্যানিশ লিগগুলোতে বুঁদ হয়ে যাওয়া৷ দেখতে দেখতে একদিন আমি রোনাল্ডো ফ্যান, আমি রিয়াল ফ্যান৷ বলে রাখা দরকার, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের রোনাল্ডোকে আমি চিনতাম না৷ আমি চিনেছিই রিয়ালের রোনাল্ডোকে৷ আমি খেলাটা দেখা শুরু করেছি রোনাল্ডো যখন রিয়ালে খেলছে৷ এখন আমি রিয়ালের খেলায় রোনাল্ডো ছাড়া অন্য কোনো দলে রোনাল্ডোকে দেখা ‘শকড' হওয়ার মতো সংবাদ৷ আমার জন্য তো বটেই, বার্সেলোনা ফ্যান কিংবা যারা নিয়মিত স্প্যানিশ লিগ দেখে তাদের জন্যও৷''
আর ফেসবুক পাতায় রুহুল আমীন সজীব শুধু লিখেছেন এটা অত্যান্ত দুঃখজনক ঘটনা...!
‘‘যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে,
আমি বাইব না মোর খেয়াতরী এই ঘাটে,
চুকিয়ে দেব বেচা কেনা,
মিটিয়ে দেব গো, মিটিয়ে দেব লেনাদেনা'' – গতকাল থেকে কবিগুরুর কথাগুলো খুব করে মনে বাজছে৷ নয়টি বছর একটি ঘরে থাকার পর আলাদা হওয়ার কষ্টটা হয়ত হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো৷ মাদ্রিদের ওই স্টেডিয়ামে হাজার হাজার মাদ্রিদবাসীদে সঙ্গে তাল মিলিয়ে ‘ক্রিস্টিয়ানো, ক্রিস্টিয়ানো' রবে কোরাস গাওয়া আর হবে না৷ কারণ তুমিই তো ইচ্ছা করে মাদ্রিদকে দূরে ঠেলে দিলে এক নিমিষে৷' দুঃখভরা হৃদয় নিয়ে এই মন্তব্য করেছেন পাঠক আরিফুর রাজু৷
-
বিশ্বের শীর্ষ দশ ধনী ফুটবল ক্লাব
১০. টটেনহাম হটস্পার
আগামী মৌসুমে এক লাফে ৩২,০০০ থেকে ৬১,০০০ ধারণ ক্ষমতায় পৌঁছে যাচ্ছে হোয়াইট হার্ট লেনে ইংলিশ ক্লাবটির ঘরের স্টেডিয়ামটি৷ নির্মাণ কাজের জন্য লম্বা সময় ধরে স্টেডিয়ামটি বন্ধ থাকলেও অর্থ কিন্তু কম কামাই করছে না স্পাররা৷ ফোর্বস ম্যাগাজিনের হিসেবে ক্লাবটির দাম ৯৪৫ মিলিয়ন ইউরো বা ৮ হাজার কোটি টাকা৷ এ মৌসুমে পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরে থেকে প্রিমিয়ার লিগ শেষ করেছে তারা, পৌঁছেছে ইউরোপা লীগের কোয়ার্টার ফাইনালে৷
-
বিশ্বের শীর্ষ দশ ধনী ফুটবল ক্লাব
৯. জুভেন্টাস
এবারো ইউরোপসেরা হওয়া হলো না জুভদের৷ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের দ্বিতীয়ার্ধে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে কঠিন পরীক্ষাই দিতে হয়েছে তাদের৷ তবে টানা ছয়বারের মতো সিরি আ’তে সেরা হয়েই মৌসুম শেষ করেছে তারা৷ তবে একটু ভাটা পড়েছে তাদের আয়ে৷ গেলোবারের চেয়ে কমেছে ৩ ভাগ৷ ক্লাবের আর্থিক মূল্যমান ১.১২ বিলিয়ন ইউরো বা প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা৷
-
বিশ্বের শীর্ষ দশ ধনী ফুটবল ক্লাব
৮. লিভারপুল
লিগ টেবিলে চার নম্বরে থেকে কোনোমতে পরের মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের টিকিট পেয়েছে ঐতিহ্যবাহী ইংলিশ ক্লাব লিভারপুল৷ এফএ কাপেও ছিটকে পড়েছে শুরুতেই৷ তারপরও ১.৩৩ বিলিয়ন ইউরোর (প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা) অলরেডরা রয়ে গেছে সবচেয়ে ধনী ফুটবল ক্লাবের তালিকার আট নম্বরে৷
-
বিশ্বের শীর্ষ দশ ধনী ফুটবল ক্লাব
৭. চেলসি
দেদারসে টাকা ঢালছেন রাশিয়ান ধনকুবের রোমান আব্রামোভিচ৷ তাই স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে এখন বড় বড় তারকাদের মেলা৷ গেল এক যুগ ধরেই প্রিমিয়ার লিগে সেরা একটি নাম চেলসি৷ বেড়েছে আয়ও৷ লেগে আছে স্পন্সরদের ভিড়৷ ক্লাবের দাম এখন ১.৬৫ বিলিয়ন ইউরো বা সাড়ে চৌদ্দ হাজার কোটি টাকা৷ সাফল্যও আসছে ক্রমাগত৷ এক মৌসুম পর আবারো শিরোপা ঘরে তুলেছে দলটি৷
-
বিশ্বের শীর্ষ দশ ধনী ফুটবল ক্লাব
৬. আর্সেনাল
এক পয়েন্টের জন্য আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের টিকেট হাতছাড়া হয়ে গেল আর্সেনালের৷ কারণ, পাঁচ-এ থেকে প্রিমিয়ার লিগ মৌসুম শেষ করেছে তারা৷ এর আগে এ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও বিদায় নিয়েছে শেষ ষোল থেকে৷ ফলে ক্লাবের দাম ৪ ভাগ কমে হয়েছে ১.৭২ বিলিয়ন ইউরো বা সোয়া ১৫ হাজার কোটি টাকা৷
-
বিশ্বের শীর্ষ দশ ধনী ফুটবল ক্লাব
৫. ম্যানচেস্টার সিটি
এক দশক আগে আবুধাবির ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ বদলে দিয়েছে সিটিকে৷ ক্লাব জড়ো করেছে নামি-দামি খেলোয়াড়দের৷ যদিও গেল মৌসুমটা বলার মতো কিছু করে দেখাতে পারেনি ম্যানচেস্টারের ক্লাবটি৷ লিগে তৃতীয় স্থান আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ ষোলতে পৌঁছেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাদের৷ তারপরও ক্লাবের দাম ধরা হচ্ছে ১.৮৫ বিলিয়ন ইউরো বা সাড়ে ষোল হাজার কোটি টাকা৷
-
বিশ্বের শীর্ষ দশ ধনী ফুটবল ক্লাব
৪. বায়ার্ন মিউনিখ
মিউনিখের ক্লাবটি শীর্ষ দশ ধনীর তালিকায় একমাত্র জার্মান ক্লাব৷ টানা পাঁচবার বুন্ডেস লিগার শীর্ষস্থান দখল করে তারা জাতীয় পর্যায়ে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে৷ পাঁচবারের ইউরোপসেরা বায়ার্ন এখন সেরা তিনের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে ২.৪১ বিলিয়ন ইউরো বা সাড়ে ২১ হাজার কোটি টাকা মূল্যমান নিয়ে৷
-
বিশ্বের শীর্ষ দশ ধনী ফুটবল ক্লাব
৩. রেয়াল মাদ্রিদ
অবাক লাগার মতোই ব্যাপার৷ তারকা খেলোয়াড়দের ভিড়, স্পেন ও ইউরোপসেরা হবার পরও গ্যালাকটিকোদের জন্য তিন নম্বর স্থানটি বরাদ্দ করেছে ফোর্বস৷ এর একটি কারণ হতে পারে ‘বুড়ো’ খেলোয়াড়দের আধিক্য (গড় বয়স ২৭.৩ বছর)৷ এছাড়া কম বয়সি যাঁরা আছেন, তাঁদের ট্রান্সফার ফি-ও অনেক বেশি৷ মাদ্রিদের ক্লাবটির মূল্যমান ৩.১৮ বিলিয়ন ইউরো বা সাড়ে আটাশ হাজার কোটি টাকা৷
-
বিশ্বের শীর্ষ দশ ধনী ফুটবল ক্লাব
২. বার্সেলোনা
মেসি, নেইমারদের মতো তারকাদের নিয়েও এ মৌসুমে আশানুরূপ ফল করতে পারেনি বার্সা৷ লিগে দ্বিতীয় আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ চারে পৌঁছেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাদের৷ অবশ্য কোপা দেল রে’তে সান্তনার শিরোপা জিতেছে তারা৷ সব মিলিয়ে কাতালানদের মূল্যমান এখন ৩.২৪ বিলিয়ন ইউরো বা ২৯ হাজার কোটি টাকা৷
-
বিশ্বের শীর্ষ দশ ধনী ফুটবল ক্লাব
১. ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
লিগ কিংবা ইউরোপ– গেল কয়েক মৌসুমে কোথাও যেন নিজেদের ঠিক মেলে ধরতে পারছিল না রেড ডেভিলরা৷ এ মৌসুমেও ইউরোপা লিগের শিরোপা ঝুলিতে নিয়ে সান্ত্বনা খুঁজছেন কোচ মোরিনিয়ো৷ ৩.২৮ বিলিয়ন ইউরো বা সাড়ে ২৯ হাজার কোটি টাকা দামের ইংলিশ ক্লাবটি তারপরও সবচেয়ে ধনী৷
তবে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো দল বদলের কারণে এখন জোভেন্টাসেও ১০ কোটি ইউরো পাবেন৷ সেকারণেই হয়ত পাঠক হাফিজুর রহমান লিখেছেন, ‘‘টাকা যেখানে এরাও সেখানে! সম্মান না, টাকাই সব কিছু৷''
চন্দন ঘোষ মনে করেন, পর্তুগিজ দলে রোনাল্ডো ছাড়া যেমন কেউ নাই, তেমনি আর্জেন্টিনা দলে মেসিও সেই অর্থে একা৷ রোনাল্ডো এবং মেসি সেরা স্ট্রাইকার৷
অন্যদিকে নিরপেক্ষভাবেই কামাল হোসেন জানিয়েছেন, ‘‘যে যেখানে ভালো সুযোগ পাবে, সে সেখানেই যাবে৷ আর ক্লাব যদি কাউকে না রাখতে চায় তাহলে তো করার কিছু নাই৷''
এছাড়া ফেসবুকবন্ধু আইয়ুবের মন্তব্য: ‘‘রোনাল্ডো একজন পরিশ্রমী খেলোয়াড়৷ পরিশ্রম দিয়েই তিনি জয় করবেন এবং জুভেন্টাসে সফলতা পাবেন''– এই কামনা করছি৷
সালেক মাহমুদ অবশ্য নিজেকে শান্ত্বনা দিয়েছেন এভাবে – ‘‘ইটালিয়ান লিগও খারাপ না৷''
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী
-
যে ফুটবল ক্লাবগুলো সবচেয়ে বেশি আয় করেছে
রেয়াল মাদ্রিদ
গত মরসুমে (২০১৪-১৫) কোনো ট্রফি জিততে না পারলেও আয়ের কোনো কমতি ছিল না স্প্যানিশ এই ক্লাবটির৷ ফলে ডেলোয়েট-এর তালিকায় টানা ১১ বারের মতো শীর্ষ আছে রেয়াল৷ উল্লেখিত বছরে তাদের আয় ছিল ৫৭৭ মিলিয়ন ইউরো৷ ছবিতে রেয়ালের স্টেডিয়াম দেখতে পাচ্ছেন৷
-
যে ফুটবল ক্লাবগুলো সবচেয়ে বেশি আয় করেছে
বার্সেলোনা
আলোচিত মরসুমে মোট পাঁচটি শিরোপা জিতেছে মেসির দল৷ তার প্রভাব পড়েছে ক্লাবের আয়ে৷ ফলে আগের মরসুমে তালিকায় চারে থাকা বার্সেলোনার স্থান এবার দু’নম্বরে৷ আয় হয়েছে ৫৬০.৮ মিলিয়ন ইউরো৷ ২০২১ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রথম ক্লাব হিসেবে এক মরসুমে এক বিলিয়ন ইউরো আয়ের রেকর্ড করার পরিকল্পনা রয়েছে ক্লাবটির৷
-
যে ফুটবল ক্লাবগুলো সবচেয়ে বেশি আয় করেছে
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
মাঠের পারফরম্যান্স বার্সেলোনার আয়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেললেও সেটা নেতিবাচক হয়নি ইংলিশ ক্লাবটির জন্য৷ আগের মতো ফুটবল সাফল্য ততটা না পেলেও সফল আর্থিক ব্যবস্থাপনার জন্য আয়ের পরিমাণ ঠিকই ছিল৷ ফলে তালিকায় তাদের অবস্থান বায়ার্ন মিউনিখ, পিএসজির চেয়েও উপরে, তিন নম্বরে৷ একক্ষেত্রে অবশ্য তাদের অবনতি হয়েছে৷ আগে অবস্থান ছিল দুইয়ে, এখন নেমে গেছে তিনে৷ ২০১৪-১৫ মরসুমে রুনির ক্লাবের আয় ছিল ৫১৯.৫ মিলিয়ন ইউরো৷
-
যে ফুটবল ক্লাবগুলো সবচেয়ে বেশি আয় করেছে
পিএসজি
ইউরোপের শীর্ষ পর্যায়ের শিরোপা জেতা এখনও সম্ভব না হলেও ধনী ক্লাবের তালিকায় ফ্রান্সের এই ক্লাবটির নাম রয়েছে৷ বলতে কি, আগেরবারের চেয়ে তাদের আয় ও অবস্থান দুটোরই উন্নতি হয়েছে৷ ৪৮০.৮ মিলিয়ন ইউরো নিয়ে তারা আছে চার নম্বরে৷
-
যে ফুটবল ক্লাবগুলো সবচেয়ে বেশি আয় করেছে
বায়ার্ন মিউনিখ
পেপ গুয়ার্দিওয়ালার নেতৃত্বে ২০১৪-১৫ মরসুমে শুধু ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা বাকি ছিল জার্মান এই শীর্ষ ক্লাবটির৷ তবুও আগেরবারের চেয়ে তাদের আয় কমে গেছে৷ ফলে ২০০৬-০৭ সালের পর সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে চলে গেছে বায়ার্ন৷ ৪৭৪ মিলিয়ন ইউরো আয় নিয়ে তাদের অবস্থান পাঁচ নম্বরে৷
-
যে ফুটবল ক্লাবগুলো সবচেয়ে বেশি আয় করেছে
ইংলিশ প্রিমিয়ারের কর্তৃত্ব
ডেলোয়েট-এর তালিকায় সেরা ২০ এর মধ্যে নয়টি ক্লাবই এই লিগে খেলে থাকে৷ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছাড়াও তালিকায় ম্যান সিটি (৬), আর্সেনাল (৭), চেলসি (৮), লিভারপুল (৯), টটেনমহ্যাম (১২), নিউক্যাসেল (১৭), এভারটন (১৮) ও ওয়েস্ট হ্যাম (২০) এর নাম রয়েছে৷
-
যে ফুটবল ক্লাবগুলো সবচেয়ে বেশি আয় করেছে
অন্যান্য লিগের ক্লাবগুলোর অবস্থান
ইটালির সিরি এ-র চারটি এবং বুন্ডেসলিগা ও লা লিগার তিনটি করে দল আছে সেরা ২০-এ৷ ফ্রান্সের আছে শুধু পিএসজি৷ বুন্ডেসলিগার বায়ার্ন ছাড়া আছে ডর্টমুন্ড (১১) ও শালকে (১৩); সিরি এ-র আছে জুভেন্টাস (১০), এসি মিলান (১৪), রোমা (১৬) ও ইন্টার মিলান (১৯)৷ আর লা লিগার রেয়াল, বার্সা ছাড়া আছে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ (১৫)৷
লেখক: জাহিদুল হক (এএফপি, এপি)