বেশিরভাগ দর্শকই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের পক্ষে মত জানান৷
পাঠক মিঠুন মনে করেন, নিরাপত্তার নামে ডিজিটাল আইন মানুষের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে৷ তাকে সমর্থন করেছেন মীর গোলাম মোস্তফা, ইঞ্জিনিয়ার রাকিব হাসান, হাফিজুর রহমান, মিজানুর রহমানসহ অসংখ্য দর্শক৷ তবে নাজমুন নাহার শোভা আন্দোলনকে সমর্থন না করলেও কালো আইন বাতিলের পক্ষে৷
দর্শক আমির হামজা মাসরুর মনে করেন, দেশের সব পরিস্থিতির সাথে নিজেদের মানিয়ে নেওয়া জাতি দ্বারা কখনো বিপ্লব ঘটানো যায় না৷ তিনি বলছেন, ‘‘একটি দেশের ভাগ্য নির্ভর করে ওই দেশের যুবসমাজের ওপর তাই তিনি অন্যায় অবিচার রুখতে যুবসমাজের এগিয়ে আসতে হবে৷ এদেশের তরুণ সমাজ সেই ৫২ সাল থেকে রক্ত দিচ্ছে, আর নয়! আপনার হেইট স্পিচ বন্ধ করুন, জনগণকে শান্তিতে বাঁচতে দিন৷’’
হোসনে মোবারক কানন বলছেন, একতাই শক্তি, এখন আমাদের সে সময় এসেছে, আমরা লেখক মুশতাক আহমেদের হত্যার বিচার চাই৷
মারুফ কামাল খান বাম ছাত্রজোটকে সমর্থন করে লিখেছেন, প্রতিবাদী তারুণ্যের পক্ষে আছি৷ দর্শক মিজানুর রহমান চৌধুরী লিখেছেন, ‘‘মত প্রকাশের স্বাধীন চিন্তকদের বাকস্বাধীনতা রক্ষায় সরকারকে আরও বেশি সহনশীলতা আচরণ দেখাতে হবে৷ সরকার যে-কোন ভাবে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে পারছে৷ সুতরাং কিছু বিষয়ে ছাড় দিতে কোন সমস্যা নাই৷’’
কারাবন্দী লেখক মুশতাকের মৃত্যুর সঠিক তদন্ত নিয়ে হতাশ শাহাবুদ্দিন তুহিন৷ তিনি বলছেন, সঠিক তদন্ত হবে বলে মনে হয় না, আর বিচার তো হাত পা বন্দী৷ নঈম উদ্দিনের মন্তব্য, ‘‘মানুষের বৈধ বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিতে চায় ওদের বিরুদ্ধে সবাইকে রাস্তায় নামতেই হবে৷’’
বাম ছাত্রজোটের প্রতিবাদের সফলতা কামনা করেছেন ফরিদুল ইসলাম, মো.আলাউদ্দিনসহ অনেকে৷ বাবুল হাসানের স্লোগান, জাগো ছাত্র সমাজ গণতন্ত্র রক্ষা করো৷
দেশে এখন পুলিশ বাহিনীর অবস্থান দেখে শ্রাবন রাজীবের কাছে নাকি মনে হচ্ছে দেশে যুদ্ধ লেগে গেছে৷
ডয়চে ভেলের পাঠক জুয়েল আহমেদ সকল বাংলাদেশিকে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়েছেন, ‘‘নিরীহ মানুষ হত্যা বন্ধ করুন! জেগে উঠুন সবাই, আমাদের প্রতিবাদ করার অধিকার আছে৷’’
প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশের ভূমিকা নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করেছেন পাঠক মকবুল হোসেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘নৈশ ভোটের সরকারের জনপ্রিয়তা তলানিতে বিন্দু পরিমান সন্দেহ নেই৷’’
মোহাম্মদ আবু তালহা মনে করেন বর্তমান সরকার আন্দোলনের ভয়ে আতঙ্কিত তাই পুলিশ বাহিনী লেলিয়ে জনতার কন্ঠ চেপে ধরছে৷
ডয়চে ভেলে থেকে প্রচারিত লাইভ ভিডিও গুলোর জন্য ধন্যবাদ দিয়েছেন মো. মিজানুর রহমান, মো. রফিকসহ অনেকেই৷
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: খালেদ মুহিউদ্দীন
-
যেসব অভিযোগে ডিজিটাল আইনে মামলা
মুশতাক আহমেদ
বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, করোনা ভাইরাস নিয়ে গুজব, রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে ২০২০ এর ৫ মে ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে র্যাব-৩৷ তাদের একজন মুশতাক আহমেদ৷ এজাহারে বলা হয়েছে, ‘‘তিনি ‘আই এম বাংলাদেশি’ পেজের এডিটর৷ তিনিও গুজব ছড়িয়েছেন৷ এছাড়া হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে৷’’ ২৫ ফেব্রুয়ারি কারাগারে তার মৃত্যু হয়৷
-
যেসব অভিযোগে ডিজিটাল আইনে মামলা
কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোর
ব়্যাবের মামলার গ্রেপ্তার হওয়া চারজনের একজন কিশোর৷ তার ফেসবুক পাতায় রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট, করোনা, সরকারদলীয় বিভিন্ন নেতার কার্টুন দিয়ে গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে এজাহারে বলা হয়৷ এছাড়া তার ব্যবহৃত ফোনে তাসনিম খলিল, শায়ের জুলকারনাইন, শাহেদ আলম ও আসিফ মহিউদ্দিনের সঙ্গে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও জানানো হয়৷ ৪ মার্চ তিনি জামিনে মুক্তি পান৷
-
যেসব অভিযোগে ডিজিটাল আইনে মামলা
দিদারুল ভূঁইয়া
ব়্যাবের মামলায় গ্রেপ্তার আরেকজন দিদার ‘রাষ্ট্রচিন্তা’ নামে একটি সংগঠনের সদস্য৷ ব্রিটিশ মানবাধিকার সংস্থা ‘আর্টিকেল ১৯’ বলছে, দিদার করোনা মহামারির বিরুদ্ধে লড়তে বাংলাদেশ সরকার যে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে, তা মনিটর করার জন্য গঠিত একটি কমিটির সদস্য৷ নিজের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনেস দিদার অভিযোগ করেন, সবচেয়ে গরিব মানুষেরাই সরকারি ত্রাণের সবচেয়ে কম অংশ পেয়েছেন৷ সম্প্রতি তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান৷
-
যেসব অভিযোগে ডিজিটাল আইনে মামলা
তাসনিম খলিল
ব়্যাবের মামলার ১১ আসামির একজন সুইডেন প্রবাসী সাংবাদিক তাসনিম খলিল৷ তার সম্পর্কে এজাহারে বলা হয়েছে, তার ফেসবুক আইডিতে জাতির জনক, মুক্তিযুদ্ধ, করোনা ভাইরাস, সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান ও বাহিনী সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার বা বিভ্রান্তি ছড়াতে অপপ্রচার বা গুজবসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্ট পাওয়া গেছে৷
-
যেসব অভিযোগে ডিজিটাল আইনে মামলা
শফিকুল ইসলাম কাজল
২০২০ সালের ৯ মার্চ ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় ফটো সাংবাদিক কাজলসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা করেন মাগুরা-১ আসনের সাংসদ সাইফুজ্জামান শেখর৷ যুব মহিলা লীগের নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার ওয়েস্টিন হোটেলকেন্দ্রিক কারবারে ‘জড়িত’দের নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কারণে এই মামলা করেছিলেন তিনি৷ এছাড়া কাজলের বিরুদ্ধে হাজারীবাগ ও তেজগাঁও থানায়ও ডিজিটাল আইনে আরও দুটি মামলা হয়৷
-
যেসব অভিযোগে ডিজিটাল আইনে মামলা
বেরোবি শিক্ষক
ফেসবুকে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমের মৃত্যু নিয়ে ‘অবমাননাকর’ পোস্ট দেয়ায় ডিজিটাল আইনের মামলায় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) বাংলা বিভাগের শিক্ষক সিরাজুম মনিরাকে ২০২০ সালের ১৩ জুন গ্রেফতার করা হয়৷ পোস্টটি দেয়ার কিছুক্ষণ পর তিনি তা মুছে দিয়েছিলেন৷
-
যেসব অভিযোগে ডিজিটাল আইনে মামলা
রাবি শিক্ষক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক কাজী জাহিদুর রহমানকে গতবছর ১৮ জুন গ্রেপ্তার করা হয়৷ পুলিশ কর্মকর্তা মো. গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমকে নিয়ে ফেসবুকে ‘আজেবাজে কথা লিখে কটূক্তির অভিযোগে’ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ বার্তা সংস্থা ডিপিএ বলছে, ২ জুন প্রকাশিত এক পোস্টে তিনি স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেছিলেন৷ যদিও নাসিমের নাম উল্লেখ করেননি৷ পোস্টটি তিনি পরে মুছেও দেন৷
-
যেসব অভিযোগে ডিজিটাল আইনে মামলা
নবম শ্রেণির ছাত্র ইমন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তির অভিযোগে ময়মনসিংহের ভালুকায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা এক মামলায় নবম শ্রেণির ছাত্র মো. ইমনকে ২০২০ সালের ২০ জুন গ্রেপ্তার করা হয়৷ এরপর তাকে কিশোর শোধনাগারে পাঠানো হয়৷ ভালুকার ওসি জানিয়েছেন, ইমন পরে পোস্টটি মুছে ক্ষমা চেয়েছিল৷
-
যেসব অভিযোগে ডিজিটাল আইনে মামলা
সুশান্ত দাশ গুপ্ত
‘আমার হবিগঞ্জ’ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক৷ এই পত্রিকায় স্থানীয় সাংসদ আবু জাহিরের অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর প্রকাশের জেরে ২০২০ সালের ২০ মে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সায়েদুজ্জামান জাহির৷ এর পরদিন সুশান্তকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ ১৪ জুন তিনি জামিন পান৷