তিনিই প্রথম সফল বাঙালি পরিচালক, যিনি তথাকথিত বাণিজ্যিক ছবি এবং আর্ট ফিল্মের তফাৎ ঘোচাতে সচেষ্ট হন৷
দক্ষিণ কলকাতার প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে নিজের বাসভবনে তাঁর মৃত্যু হয়৷ বেশ কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি৷ প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগে ভুগছিলেন ঋতুপর্ণ৷ হৃদযন্ত্র বিকল হয়েই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবার সূত্র থেকে জানা গেছে৷ মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৪৯ বছর৷ ঘুমের মধ্যেই এই বিশিষ্ট পরিচালক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বলে জানা গেছে৷ এর থেকেই বোঝা যায় যে, মৃত্যু আমাদের প্রত্যেকের জীবনে অনিবার্য, কিন্তু কর্ম চিরস্থায়ী৷
ঋতুপর্ণ ঘোষের পরিচালিত প্রথম ছবি হিরের আংটি মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে৷ এরপর থেকে একের পর এক সফল ও উল্লেখযোগ্য ছবি উপহার দিয়েছেন তিনি৷ পেয়েছেন ১২টি জাতীয় পুরস্কার ও একাধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কার৷ ১৯৬৩ সালের ৩১শে আগস্ট কলকাতায় জন্ম হয় ঋতুপর্ণ ঘোষের৷ ১৯৯৫ সালে ‘উনিশে এপ্রিল' সিনেমার জন্য প্রথম জাতীয় পুরস্কার পান৷ ‘সানগ্লাস' ও ‘রেইনকোট' নামে দুটি হিন্দি ছবিও পরিচালনা করেছেন তিনি৷
-
এভারেস্ট জয়ের ষাট বছর
প্রথম জয়, প্রথম মৃত্যু
২০১০ সালের ২৩ মে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্টের সর্বোচ্চ শেখরে পা রাখেন মুসা ইব্রাহীম (বামে)৷ সেই জয়ের খবরে আনন্দের বন্যা নামে বাংলাদেশে৷ আর ২০১৩ সালে এভারেস্ট জয় করে ফেরার পথে মারা যান সজল খালেদ৷ এই ছবিঘরে মানবজাতির এভারেস্ট জয়ের ইতিহাসের দিকে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে৷ একেবারে সেই ১৯৫৩ সাল থেকে৷
-
এভারেস্ট জয়ের ষাট বছর
কোড ম্যাসেজ
‘‘স্নো কন্ডিশনস ব্যাড স্টপ অ্যাডভান্সড বেস এবানডন্ড মে টোয়েন্টিনাইন স্টপ অ্যাওয়েটিং ইমপ্রুভমেন্ট স্টপ অল ওয়েল’’ এই ম্যাসেজের অর্থ হচ্ছে: ‘‘হিলারি এবং তেনজিং ২৯ মে এভারেস্টের সর্বোচ্চ চূড়া জয় করেছে৷’’ ১৯৫৩ সালের পহেলা জুন এই তথ্য লন্ডনে পৌঁছায়৷ এভারেস্টের সর্বোচ্চ শিখরে মানুষের পদচিহ্নের খবর শুনে উৎসবে মেতে ওঠে সবাই৷
-
এভারেস্ট জয়ের ষাট বছর
কে আগে চূড়ায় উঠেছিল?
নিউজিল্যান্ডের এডমান্ড হিলারি আর শেরপা তেনজিং নোরগে (ছবিতে বামে) এভারেস্ট জয়ের পর এক নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়৷ এই দু’জনের মধ্যে কে আগে চূড়ায় পা রেখেছিলেন তা নিয়ে শুরু হয় তুমুল রাজনৈতিক বিতর্ক৷ নেপাল এবং ভারত এই জয় তাদের দাবি করে৷ তবে এভারেস্ট জয়ের কয়েক বছর পর হিলারি জানান, চূড়ায় ওঠার সময় তিনি তেনজিং এর থেকে কয়েক পা সামনে ছিলেন৷
-
এভারেস্ট জয়ের ষাট বছর
অক্সিজেন ছাড়াই এভারেস্ট জয়
হিলারি ও তেনজিং-এর সেই ঐতিহাসিক অভিযানের পরের তিন দশকে বহু পর্বতারোহী বিভিন্ন পথ ধরে এভারেস্টে উঠেছেন৷ ১৯৭৮ সালে সাউথ টাইরোলিয়ান রাইনহোল্ড মেসনার (ডানে) এবং অস্ট্রেলিয়ান পিটার হেবেলার (বামে) অক্সিজেনের বাড়তি জোগান ছাড়াই এভারেস্ট জয় করেন৷
-
এভারেস্ট জয়ের ষাট বছর
দলে দলে এভারেস্ট জয়
১৯৯০ দশকের দিকে দল বেধে পর্বতারোহীরা এভারেস্ট জয় শুরু করেন৷ সেই সময় থেকে প্রতিবছর শত শত পর্বতারোহী এভারেস্টের চূড়ায় উঠছেন৷ রেকর্ড বলছে, এখন অবধি কমপক্ষে ৬,০০০ বার সফলভাবে এভারেস্টের চূড়া জয় করেছে মানুষ৷ আবহাওয়া ভালো থাকলে নির্দিষ্ট কিছু সময়ে এভাবেই এভারেস্টের চূড়ার দিকে যাত্রা করেন পর্বতারোহীরা৷
-
এভারেস্ট জয়ের ষাট বছর
চূড়ায় পর্বতারোহীদের ভিড়
সফলভাবে এভারেস্টের চূড়ায় উঠতে চূড়ান্ত পর্যায়ে অ্যাডভান্সড বেস ক্যাম্প থেকে কমপক্ষে চারদিন সময় লাগে আর এই সময়টা আবহাওয়া অবশ্যই ভালো থাকতে হবে৷ সাধারণত একইসময়ে অনেক অভিযাত্রী চূড়ার দিকে যাত্রা করেন, কেননা সবাই আবহাওয়ার পূর্বাভাষের উপর নির্ভরশীল৷ ফলে একদিনে অনেক পর্বতারোহীকে চূড়ায় এভাবে ভিড় করতে দেখাটা স্বাভাবিক৷
-
এভারেস্ট জয়ের ষাট বছর
শেরপারা পথ দেখান
শেরপাদের সহায়তা ছাড়া কারো পক্ষে এভারেস্টের চূড়া জয় করা কার্যত অসম্ভব৷ তাঁরা এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার পথের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা দূর করতে সদা তৎপর৷
-
এভারেস্ট জয়ের ষাট বছর
৮০ বছরে এভারেস্ট জয়
এভারেস্ট প্রতি বছরই চলে রেকর্ড গড়ার এবং ভাঙার খেলা৷ এই বসন্তে আশি বছর বয়সি জাপানি বৃদ্ধ ইউচিরো মিউরা এভারেস্টের সর্বোচ্চ চূড়ায় পা রেখেছেন৷ এর আগে ২০১০ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে এভারেস্ট জয় করেন জর্ডান রেমেরো৷ দুটোই রেকর্ড৷
-
এভারেস্ট জয়ের ষাট বছর
উদ্ধার তৎপরতা
২০০৩ সালে এভারেস্ট বেসক্যাম্পে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান দুই ব্যক্তি৷ দশ বছর পর মানে এখন এভারেস্ট বেসক্যাম্প পর্যন্ত হেলিকপ্টারে যাতায়াত স্বাভাবিক ব্যাপার৷ এখন অবধি সর্বোচ্চ ৭,৮০০ মিটার উচ্চতায় হেলিকপ্টার ব্যবহার করে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা সম্ভব হয়েছে৷
-
এভারেস্ট জয়ের ষাট বছর
এভারেস্টে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এভারেস্টেরও ক্ষতি হচ্ছে৷ গত পঞ্চাশ বছরে সেখানকার বরফের পরিমাণ কমেছে ১৩ শতাংশ৷
-
এভারেস্ট জয়ের ষাট বছর
গর্বের এভারেস্ট
এভারেস্টের অধিকাংশ অংশই নেপালের আওতায় রয়েছে৷ ফলে এভারেস্টকেন্দ্রিক পর্যটন খাত থেকে বিপুল অর্থ আয় করে দেশটির সরকার৷ প্রতি বছরের ২৯ মে ‘আন্তর্জাতিক মাউন্ট এভারেস্ট দিবস’ উদযাপন করে নেপাল৷ ১৯৫৩ সালের এই দিনে এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছিল মানুষ৷
-
এভারেস্ট জয়ের ষাট বছর
পর্যটক কমাতে অনাগ্রহী নেপাল
এভারেস্টের চূড়ায় আরোহনের ক্ষেত্রে বিশেষ কোন বিধিনিষেধ আরোপ করার পক্ষে নয় নেপাল৷ বরং প্রয়োজনীয় টাকা থাকলে যেকেউ চেষ্টা করতে পারে এভারেস্ট জয়ের৷
-
এভারেস্ট জয়ের ষাট বছর
বাংলাদেশের এভারেস্ট জয়
২০১০ সালের ২৩ মে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন মুসা ইব্রাহীম৷ এরপর আরো চারজন বাংলাদেশি এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছেন৷ এদের মধ্যে দু’জন মেয়ে৷ আর ২০১৩ সালে চূড়া জয় করে নামার পথে ‘ডেথ জোনে’ মারা যান সজল খালেদ৷
লেখক: স্টেফেন নেস্টলার / আরাফাতুল ইসলাম
এছাড়াও, অমিতাভ বচ্চনকে নিয়ে ইংরেজিতে তৈরি করেছেন ‘দ্য লাস্ট লিয়র'৷ অভিনয়ও করেছেন কয়েকটি ছবিতে৷ টেলিভিশনে তাঁকে দেখা গেছে উপস্থাপকের ভূমিকাতেও৷
ঋতুপর্ণ ঘোষের মৃত্যুর খবর পেয়ে সকাল থেকেই তাঁর বাড়িতে আসতে শুরু করেন সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ৷ তাঁর মৃত্যুতে শিল্পীমহলে শোকের ছায়া৷ প্রয়াত পরিচালককে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর বাসভবনে যান সিনেমা জগতের ব্যক্তিত্বরা৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ও ঋতুপর্ণ ঘোষের বাসভবনে যান৷ বিশিষ্ট পরিচালকের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ঋতুপর্ণের তুলনা তিনি নিজেই৷ শোক প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী মণীশ তিওয়ারিও৷
তিনি মারা গেলেও, অমর হয়ে থাকবে তাঁর কর্মময় জীবন৷ মনে হচ্ছে বাংলা ছবি আজকে তাঁর একজন অভিভাবককে হারালো৷ আমরাও গভীরভাবে মর্মাহত৷ এই লম্বা ই-মেলটি পাঠিয়েছেন ইয়ামিন হোসেন,পাটিকাবাড়ী, নওদা, মুর্শিদাবাদ থেকে৷
প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই ডয়চে ভেলেকে নিউজিল্যান্ডের পর্বতারোহী এডমান্ড হিলারি আর নেপালের শেরপা তেনজিং নোরগের আজ থেকে ৬০ বছর আগে এভারেস্ট শৃঙ্গ জয়কে স্মরণ করে একটি সময়োপযোগী প্রতিবেদন তুলে ধরার জন্য৷ ধন্যবাদ অসাধারণ ছবির সাহায্যে ছবিঘরের উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে ১৯৫৩ সাল থেকে মানবজাতির এভারেস্ট জয়ের ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকানোর আন্তরিক প্রয়াসের জন্যও৷ দুর্গম শৃঙ্গ আরোহণে কঠিন বাধা, দুর্গমতা, অনেক প্রতিকূলতা এবং প্রতি মুহূর্তে জীবন-মৃত্যুর হাতছানি থাকা সত্ত্বেও আজ প্রথম শৃঙ্গ জয়ের ৬০ বছর পরও মাউন্ট এভারেস্ট বিশ্বের সকল পর্বতারোহীর কাছে আশা ও প্রত্যাশার শৃঙ্গ হয়ে চির বিরাজমান থাকবে৷ সুভাষ চক্রবর্তী, নতুন দিল্লি থেকে লিখেছেন৷
- ধন্যবাদ দু'জনকেই৷ অন্য বন্ধুদেরও অনুরোধ করছি মতামত জানানোর জন্য৷
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ