‘তারা ম্যাডামের নাতনি, হরতাল অবরোধ জনগণের জন্য’ | পাঠক ভাবনা | DW | 04.02.2015
  1. Inhalt
  2. Navigation
  3. Weitere Inhalte
  4. Metanavigation
  5. Suche
  6. Choose from 30 Languages

পাঠক ভাবনা

‘তারা ম্যাডামের নাতনি, হরতাল অবরোধ জনগণের জন্য’

পরীক্ষা থাকায় হরতালের মধ্যেই মালয়েশিয়া ফিরে গেছেন সদ্য প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী ও দুই মেয়ে, অর্থাৎ খালেদা জিয়ার দুই নাতনি৷ অথচ দেশে হরতালের কারণে পরীক্ষা দিতে পারছে না শিক্ষার্থীরা৷ এ বিষয়েই বন্ধুদের মন্তব্য...

ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায় বিষয়টি ৫৪৫ বার ‘শেয়ার' হয়েছে, অর্থাৎ নজর কেড়েছে অনেক পাঠক বন্ধুর৷ আব্দুল্লাহ আল-হাফিজ তুতুল লিখেছেন, ‘‘আরাফাত রহমানের দুই কন্যা ও স্ত্রী মালয়েশিয়া ফিরে গেছেন৷ কারণ মেয়েদের স্কুলে পরীক্ষা আছে৷ কিন্তু তারা তাদের বা যাদের দাদির বাংলাদেশ নিয়ে একবারও ভাবলো না? একবারও ভাবলো না ১৫ লক্ষ এসএসসি পরীক্ষার্থীর কথা?...''

জাভেদ ওমর জানাচ্ছেন, ‘‘আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর মাত্র কয়েক দিনের মাথায় খালেদা জিয়ার দুই নাতনি তাদের পরীক্ষা দেয়ার জন্য দেশ ত্যাগ করলো৷ অথচ আমাদের দেশের লাখ লাখ ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষা আজ অনিশ্চিত৷ এর জবাব কে দেবে? কেউ ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য মরিয়া আর কেউ ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য৷ আমরা কি কোনো দিনই এই অসুস্থ রাজনীতিবিদের হাত থেকে মুক্তি পাব না?''

মাখন রাজের কথায়, ‘‘কি আজব দেশে বাস করি আমরা৷ কোকোর মেয়েরা পরীক্ষার জন্য বিদেশে আর আমাদের দেশের হাজার হাজার পরীক্ষার্থী – এদের জন্য এই বেগমের মন গলে না...৷''

এটিএন সৈফুল আলম লিখছেন, ‘‘তারা ম্যাডামের নাতনি, হরতাল অবরোধ জনগণের জন্য৷''

শেখ শানু লিখেছেন, ‘‘পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেবার কোনো প্রয়োজন নাই৷ যে দেশে ৮ ক্লাস পাস করেই প্রধানমন্ত্রী হওয়া যায়, যে দেশে বাবার ভাঙা স্যুটকেস থেকে দেশের সেরা ধনীর তালিকার নাম আসে, সেখানে খালেদা জিয়ার কাছে মুরিদ গ্রহণ করলেই তো কেল্লাফতে৷''

নওরেন লাকির কথায়, ‘‘১৯৯৬ সালে পরীক্ষা তিন মাস পরে হয়েছিল৷ সেসময় তো কোনো অসুবিধা হয়নি৷ আর পরীক্ষা দিয়ে ডিগ্রি অর্জন করে কী হবে? তারা ঘুস না দিলে তো চাকরি দেয় না৷''

ওদিকে মো. জাহিদুল ইসলাম লিখছেন, ‘‘১৫ লক্ষ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারছে না৷ এই নিয়ে কত মাথা ব্যথা৷ কিন্তু ১৫ কোটি মানুষ যে ভোট দিতে পারেনি, সে নিয়ে কোনো কথা নেই৷ বাহ, কী চমৎকার আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের নীতিবান মানুষ৷''

মাহফুজ আদনানও সে কথাই লিখেছেন৷ তাঁর কথায়, ‘‘সবাই পরীক্ষার্থীদের কথাই ভাবছেন৷ কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা তো কেউ মনেই করছেন না৷ সারা দেশ এখন কিছু মানুষের হাতে জিম্মি হয়ে আছে৷ দেশে অরাজকতা চলছে৷ সব সময় পেট্রোল বোমার ভয়, ককটেলের ভয়৷ শান্তিতে চলাফেরা করতে পারছি না৷ দেশের দুই শীর্ষ নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে বলবো, শুধু গদির চিন্তা না করে সাধারণ মানুষের দিকে তাকান৷ মনে রাখবেন, সাধারণ মানুষের ভোটেই আপনারা গদিতে বসেন৷ তাই আমাদের শান্তি দিন৷ গণতন্ত্র ও উন্নয়নের আগে চাই শান্তি৷ আমাদের শান্তিতে থাকতে দিন৷''

মো. তুহিন ইরানি লিখেছেন, ‘‘খালেদার নিজের পরিবার ঠিক ভালো আছে৷ মরছি তুমি, আমি, সাধারণ মানুষ...৷'' এর উত্তরে রোজাচ সাহা রায় লিখছেন, ‘‘শুধু খালেদা নয়, হাসিনার পুরো পরিবার দেশের বাইরে৷ দুই দল নিজেদের মানুষদের ভালো রাখে আর আমাদের জ্বালায়৷''

সুমিয়া থেবার কথায়, ‘‘হাসিনার ছেলে, মেয়ে, নাতি-নাতনি, বোন, ভাগ্নে সব বিদেশে কেন? নিজেদের নিরাপত্তার জন্য৷ খালেদা জিয়া কিন্তু ছেলেদের সব সময় দেশেই রাখতে চেয়েছেন৷ কিন্তু হাসিনা চরম নির্যাতন চালিয়ে তাঁদের মৃতপ্রায় করে বিদেশে পাঠিয়েছেন৷ তাঁদের দেশে থাকতে দেননি হাসিনাই৷''

রুহুল আমিন লিখছেন, ‘‘দুই নেত্রীর কারণে আমাদের ছেলে-মেয়েরা পরীক্ষা দিতে পারে নাই, কিন্তু তাঁদের ছেলে-মেয়েরা ঠিকই লেখাপড়া করতেছে৷''

আসাদুল হক বলছেন, ‘‘মন্ত্রীদের কোনো সমস্যা নাই৷ কারণ দেশটা কারো বাবার, কারো স্বামীর৷ সব দোষ সাধারণ জনগণের৷ তাই পরীক্ষা হোক বা না হোক, তাঁদের কোনো কিছু যায় আসে না৷''

ইসমাইল হোসেনেরও বক্তব্য, ‘‘সরকার এদের প্রতি যে সহানুভূতি দেখাচ্ছে, তাতে জনগণেরই ক্ষতি হচ্ছে৷'' রহমান শাহ লিখছেন, ‘‘সোনার বাংলার জনগণ তবুও বোঝে না, তাহলে এবার বুঝতে পারছেন কে কার জন্য?''

বলা বাহুল্য, কোকোর দুই মেয়ের মালয়েশিয়া যাওয়া বাংলাদেশের চলমান রাজনীতির প্রসঙ্গকেও ছুঁয়ে গেছে৷ নাঈমুল হুদা লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশের মানুষের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব কার? যদি এই দায় সরকার না নেয়, তাহলে ক্ষমতা ছেড়ে দেয় না কেন? আমি এ দেশের নাগরিক হিসেবে, একজন আহত বোনের ভাই হিসেবে এর উত্তর জানতে চাই৷ এ দেশে আমার জন্ম, তাই আমি এ দেশেই বেঁচে থাকার অধিকার চাই, ভালোভাবে রাস্তায় হাঁটতে চাই৷ আমি আর ককটেলের গন্ধ শুকতে চাই না, চাই শুধু একটু শান্তি৷ সরকারের কাছে আমরা কি এই বেঁচে থাকার দাবিটাও করতে পারি না? আর কত লাশ হলে এই লাশের মিছিল বন্ধ হবে? আর কত বোন বিধবা হলে এই নোংরা রাজনীতি বন্ধ হবে? এই রাজনীতি কি জনগণের জন্য? নাকি নিজেরদের ক্ষমতা দখলের, শুধু আমাদের শোষণ করার জন্য? আমরা কার কাছে এই লাশের বিচার চাইব? আমাদের ক্ষতিপূরণ কে দেবে? কে দেবে শান্তিতে ঘুমানোর নিশ্চয়তা? অন্তত এই প্রশ্নের জবাব দিন৷''

মোহসিন আলির কথায়, ‘‘ওদের হরতাল৷ ওরা ইচ্ছা করলে গাড়ি চালাবে আর ইচ্ছা করলে গাড়ি জ্বালাবে৷'' রাজীব কুমার এর জবাবে লিখেছেন, ‘‘হ্যাঁ, শুধু তাই না বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতারাও এর আওতামুক্ত৷ একমাত্র সাধারণ জনগণই এর শিকার৷''

রাজীব বিশ্বাসের কথাতেও এক সুর, ‘‘আরে ভাই, যাঁরা রাজনীতি করেন তাঁরা সবাই হরতাল মুক্ত৷ আগুনে পুড়বে শুধু জনগণ৷'' এর জবাবেই হয়ত পুরু দেব পেকুয়া লিখেছেন, ‘‘রাজনীতি মানুষের চিন্তা করে না৷ রাজনীতির সমীকরণটা ভুল৷ রাজনীতির এবং তার সাথে জড়িত মানুষের বিবেক থাকে না৷''

এস. রহমান লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য সরকার দায়ী৷ জোর করে ক্ষমতা টিকাতে গিয়ে সব কিছু লেজে গোবরে করে ফেলছে তারা৷ তবে এখনো সময় আছে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার৷ শক্তি প্রয়োগ, হত্যা কোনটাই সমাধান নয়৷ এতে বরং নতুন নতুন ক্ষত সৃষ্টি হয়, যা পরবর্তীতে আরো ভয়ংকর দগদগে ঘা সৃষ্টি করবে৷''

সোহেল রানার কথায়, ‘‘আমরা বাঙালি জাতি নাকি অন্যায়, অত্যাচারী জাতি৷ আজ যারা মানুষ পুড়াইয়া মারছে, তাদের শরীরে কি মানবদেহের কোনো কিছুই নাই? নাকি এরা মানুষ থেকে পশু হয়ে গেছে?''

আফজাল হোসেনের বক্তব্য, ‘‘কেন? নির্বাচন দিলেই তো সব সমস্যার সমাধান হয়৷''

সাজু লি-রও একই প্রশ্ন, ‘‘হরতাল কেন? অবৈধ আওয়ামী সরকারের কাছ থেকে জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য!! এই অবৈধ সরকার কেন পারলো না শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে? অবৈধ হাসিনা সরকার একটা গ্রহণযোগ্য ভোটের ব্যবস্থা করলেই তো সব সমস্যার সমাধান হয়...৷''

ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগ

নির্বাচিত প্রতিবেদন