‘মানুষের মনেই যদি ন্যায়ের অনুভূতি না থাকে, তবে মূর্তি দিয়ে কী হবে?' | পাঠক ভাবনা | DW | 31.05.2017
  1. Inhalt
  2. Navigation
  3. Weitere Inhalte
  4. Metanavigation
  5. Suche
  6. Choose from 30 Languages

পাঠক ভাবনা

‘মানুষের মনেই যদি ন্যায়ের অনুভূতি না থাকে, তবে মূর্তি দিয়ে কী হবে?'

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের সামনে স্থাপিত ভাস্কর্য অপসারণ ও পুনঃস্থাপনের পক্ষে বিপক্ষে নানা মন্তব্য উঠে এসেছে ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায়৷ 

ভাস্কর্যটা স্থাপন করা হয়েছে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে তখন কিন্তু কেউ অপসারণের দাবি তোলেনি কিন্তু পাঁচমাস পর কেন এটা নিয়ে এত হৈচৈ সেটাই জানতে চেয়েছেন ডয়চে ভেলের পাঠক আকাশ ইকবাল৷ তাছাড়া তিনি এই বিষয়টিকে এক ধরণের নাটক বলে মনে করছেন৷ তিনি তাঁর একটি ব্যাখ্যাও দিয়েছেন এভাবে, ‘‘পুরো ব্যাপারটা এক ধরণের নাটক হয়েছে৷ তবে আমি এটা বোঝাতে চাইছি না, ভাস্কর্য সরানোতে আমি খুশি৷ একটা ভাববার বিষয় যে সরকারের এমপি মন্ত্রীরা বলছে সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে ভাস্কর্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সরানো হয়নি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তথা প্রধান বিচারপতির নির্দেশে সরানো হয়েছে৷ অন্যদিকে শুক্রবার দুপুরে হেফাজতে ইসলাম ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে মিছিল করতে করতে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছে এবং কয়েকটা টিভি চ্যানেল এর সাক্ষাৎকারে হেফাজতের অনেকে এই কথা বলেছেন৷''

আকাশ ইকবাল আরও লিখেছেন, ‘‘ভাস্কর্য পুনঃস্থাপনে আমিও নাখোশ, অখুশি৷ কারণ অ্যানেক্স ভবনের সামনে অর্থাৎ সুপ্রিমকোর্টের পেছনে যেখানে স্থাপন করা হয়েছে সেখানে সুপ্রিমকোর্টের সামনে থেকে কেউ দেখবে না৷''

আকাশ ইকবালের বক্তব্যের শুরুতে যে প্রশ্নটি ছিলো ‘ভাস্কর্য স্থাপনের পাঁচমাস পর কেন অপসারণের দাবি'- তার উত্তরে পাঠক জুনায়েদ হাসান নিশ্চিত হয়েই পাল্টা উত্তর দিয়েছেন, ‘‘স্থাপনের সাথে সাথেই প্রতিবাদ জানানো হয়, আপনি ভাল করে জেনে নেবেন৷''

সাইফুল বাতেন টিটো ফেসবুক পাতায় ডয়চে ভেলেকে লক্ষ্য করে ‘হেফাজত' সম্পর্কে তাঁর নিজস্ব ভাবনার কথা লিখেছেন এভাবে, ‘‘একটা মজার বিষয় খেয়াল করুন, ডয়চে ভেলের ফেসবুকে যারা  ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে কথা বলছে তাদের মধ্যে কোন মেয়ে নেই৷ এই ভাস্কর্য নিয়ে যে হেফাজতে ইসলামের সমস্যা তা আমরা দেখতে পাই সাদা চোখে নিতান্তই ধর্মীয় চেতনাগত জায়গা থেকে কথা বলছে৷ আসলে কিন্তু বিষয়টি তা নয়৷ হেফাজত আসলে পরীক্ষা করে দেখছে সরকারকে চাপ দিয়ে কি কি আদায় করা যায়৷ সরকারের জন্য এখন একমাত্র হুমকি আসলে এই হেফাজত৷ তারা নির্দলীয় একথা প্রচার করায় অন্যান্য দলের সমর্থনও পাচ্ছে৷ হেফাজত আসলে রাজনীতিতে নামতে চাইছে৷''তবে মানুষের মনেই যদি ন্যায়বিচার, ন্যায় অনুভূতি না থাকে, তাহলে মূর্তি দিয়ে কী হবে? এই প্রশ্ন আবুল হাসানের৷

যদিও ভাস্কর্য পুনঃস্থাপনে পুরোপুরি বিরুদ্ধে মো.ফারুক আহমেদ৷ তিনি তার মত প্রকাশ করেছেন এভাবে, ‘‘ গ্রীকদেবী মুর্তি মুসলমানদের ন্যায় বিচারের প্রতীক হতে পারে না৷''

আর নিজাম উদ্দিন বলছেন, ‘‘সরকার অবশ্যই এই দেশের মুসলমানেদের সাথে এই মূর্তি নিয়ে তামাশা করেছে, যারা বলে এটি ন্যায় বিচারের প্রতীক সেই সমস্ত নির্বোধ বোকা ব্যক্তিদের কাছে মুসলমানদের প্রশ্ন- ভাস্কর্য হোক কিংবা মূর্তি এটি কিভাবে ন্যায় বিচারের প্রতীক হল?'' 

তবে ইলিয়াস জাবেরের ধারণা কিছু উগ্রপন্থি হিন্দু আর নাস্তিক ব্যতীত সকলেই  নাকি মূর্তি স্হাপনের বিপক্ষে৷

আর  ভাস্কর্য নিয়ে এতসব অর্থাৎ অপসারণ ও পুনঃস্থাপনের পুরো বিষয়টিকে পাঠক আনোয়ার হোসেন হাস্যকর বলে মনে করেন৷

ভাস্কর্য অপসারণ ও পুনঃস্থাপনের বিষয়টিকে বাংলাদেশের ৯০% মুসলমানদের সাথে তামাশা করা হয়েছে বলেই মনে করেন পাঠক শরীফ খানও৷ আর অন্য ধর্মের উপাসনালয় ছাড়া ইসলাম ধর্মে কোথাও মূর্তি থাকার কোন প্রশ্ন আসে না বলে লিখেছেন মোঃ হাসানুল হক হাসান৷

তবে একটু রসিকতার সুরে ফেসবুক বন্ধু জোবায়ের হোসেন লিখেছেন ‘‘আসলে আমাদের দেশের কিছু বেশি বুদ্ধিমানদের কারণে আজকে দেশের এ অবস্থা৷''

সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার

সম্পাদনা:  আশীষ চক্রবর্ত্তী

নির্বাচিত প্রতিবেদন