ভিডিওটি দেখতে দেখতে ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায় দর্শক আতিকুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘সরকারের বিরুদ্ধে যেন কেউ কোন লেখালেখি করতে না পারে এবং তাদের দুর্নীতি যেন কেউ প্রকাশ করতে না পারে সেই জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে৷’’
‘‘হাসিনা সরকারের এই আইন করার মূল লক্ষ্য ছিল বিরোধী দল ও সাধারণ মানুষের মুখ বন্ধ করে দেয়া, কালো আইন বাতিল করার দাবি জানাচ্ছি৷’’ মন্তব্য আনাম রহমানের৷
ফেসবুক পাতায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বতিলের এই দাবি অসংখ্য পাঠকের৷ আবু সুফিয়ান মনে করেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা এখন সময়ের দাবি৷ ভিডিওটি দেখার সময় দর্শক ফয়সাল অনিক মন্তব্য করেছেন, ‘‘আপনারা বারবার বলছেন লেখক মুশতাকের মৃত্যুর প্রতিবাদে মিছিল, মৃত্যুর প্রতিবাদ হয়? বলেন হত্যার প্রতিবাদে মিছিল৷ কারা হেফাজতে তাকে হত্যা করা হয়েছে৷’’
এদিকে রায়হান লেখক মুশতাকের জামিন নামঞ্জুর করা বিচারকদের অপসারণ দাবি করেছেন, তিনি লিখেছেন, ‘‘যে সকল বিচারক শহীদ মুশতাকের জামিন দেয় নাই, ন্যায় বিচার আর নিরপেক্ষ ব্যবস্থার স্বার্থে, তাদেরকে অপসারণ করা হোক৷’’
আর এসএম মনির হোসেন লিখেছেন, ‘‘নুরু ভাই এর বক্তব্য এ সময়ের সেরা বক্তব্য মনে হচ্ছে৷ সব নেতা একই সুরে কথা বললে এই সরকার তার পেটুয়া বাহিনী নিয়েও টিকে থাকতে পারবে না৷’’
দেশের স্বার্থে সবাইকে এক কাতারে ঐক্যবদ্ধভাবে নামতে হবে তবেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে বলে মনে করেন মোহাম্মদ মাসুম৷ তিনিও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানান৷
তরুণ গোমেস বলছেন, গঠনমুলক সমালোচনা মানেই দেশদ্রোহিতা নয়৷ আইনের অপব্যবহার একটা গণতান্ত্রিক সরকারের অনেক ভালো অর্জনগুলোকে ম্লান করে দিতে পারে৷
গণতান্ত্রিক অধিকার অক্ষুন্ন রাখতে শান্তি পূর্ণ মিছিল হওয়া উচিত বলে মনে করেন পাঠক আবদুস সামাদ৷
‘‘ডিজিটাল আইনের নামের মানুষকে হয়রানি এবং লেখক ও সাংবাদিকদের হত্যা করা হয়েছে, আমি এই ডিজিটাল আইন বাতিল চাই৷'' দাবি অনেকের মতো নূর আলমেরও৷
আর আবদুল্লাহ আল মামুন বলছেন, ‘‘এইটা সাইবার অপরাধ আইন নয়, এটা বিরোধী মত দমনের কালো আইন, এই আইন অবিলম্বে বাতিল করা হোক৷’’
দেশের সবাইকে এক হতে হবে আর একবার দেশ স্বাধীন করতে হবে- মন্তব্য শাহজাহান খানের৷
জনগণের মনের ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার দাবি জানিয়েছেন দর্শক সানজিদা পারভীন ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায়৷
ফারিদ আহমেদ বলছেন, ‘‘জনগণের জন্যে আইন, আইনের জন্যে জনগণ না৷ যৌক্তিক দাবি, না মানলে আদায় করে নিতে হবে৷’’
তবে পুলিশ দিয়ে এই আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না বলেই দৃঢ় বিশ্বাস দর্শক মো.মোত্তাসীম বিল্লাহর৷
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: খালেদ মুহিউদ্দীন
-
যেসব অভিযোগে ডিজিটাল আইনে মামলা
মুশতাক আহমেদ
বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, করোনা ভাইরাস নিয়ে গুজব, রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে ২০২০ এর ৫ মে ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে র্যাব-৩৷ তাদের একজন মুশতাক আহমেদ৷ এজাহারে বলা হয়েছে, ‘‘তিনি ‘আই এম বাংলাদেশি’ পেজের এডিটর৷ তিনিও গুজব ছড়িয়েছেন৷ এছাড়া হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে৷’’ ২৫ ফেব্রুয়ারি কারাগারে তার মৃত্যু হয়৷
-
যেসব অভিযোগে ডিজিটাল আইনে মামলা
কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোর
ব়্যাবের মামলার গ্রেপ্তার হওয়া চারজনের একজন কিশোর৷ তার ফেসবুক পাতায় রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট, করোনা, সরকারদলীয় বিভিন্ন নেতার কার্টুন দিয়ে গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে এজাহারে বলা হয়৷ এছাড়া তার ব্যবহৃত ফোনে তাসনিম খলিল, শায়ের জুলকারনাইন, শাহেদ আলম ও আসিফ মহিউদ্দিনের সঙ্গে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও জানানো হয়৷ ৪ মার্চ তিনি জামিনে মুক্তি পান৷
-
যেসব অভিযোগে ডিজিটাল আইনে মামলা
দিদারুল ভূঁইয়া
ব়্যাবের মামলায় গ্রেপ্তার আরেকজন দিদার ‘রাষ্ট্রচিন্তা’ নামে একটি সংগঠনের সদস্য৷ ব্রিটিশ মানবাধিকার সংস্থা ‘আর্টিকেল ১৯’ বলছে, দিদার করোনা মহামারির বিরুদ্ধে লড়তে বাংলাদেশ সরকার যে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে, তা মনিটর করার জন্য গঠিত একটি কমিটির সদস্য৷ নিজের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনেস দিদার অভিযোগ করেন, সবচেয়ে গরিব মানুষেরাই সরকারি ত্রাণের সবচেয়ে কম অংশ পেয়েছেন৷ সম্প্রতি তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান৷
-
যেসব অভিযোগে ডিজিটাল আইনে মামলা
তাসনিম খলিল
ব়্যাবের মামলার ১১ আসামির একজন সুইডেন প্রবাসী সাংবাদিক তাসনিম খলিল৷ তার সম্পর্কে এজাহারে বলা হয়েছে, তার ফেসবুক আইডিতে জাতির জনক, মুক্তিযুদ্ধ, করোনা ভাইরাস, সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান ও বাহিনী সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার বা বিভ্রান্তি ছড়াতে অপপ্রচার বা গুজবসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্ট পাওয়া গেছে৷
-
যেসব অভিযোগে ডিজিটাল আইনে মামলা
শফিকুল ইসলাম কাজল
২০২০ সালের ৯ মার্চ ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় ফটো সাংবাদিক কাজলসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা করেন মাগুরা-১ আসনের সাংসদ সাইফুজ্জামান শেখর৷ যুব মহিলা লীগের নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার ওয়েস্টিন হোটেলকেন্দ্রিক কারবারে ‘জড়িত’দের নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কারণে এই মামলা করেছিলেন তিনি৷ এছাড়া কাজলের বিরুদ্ধে হাজারীবাগ ও তেজগাঁও থানায়ও ডিজিটাল আইনে আরও দুটি মামলা হয়৷
-
যেসব অভিযোগে ডিজিটাল আইনে মামলা
বেরোবি শিক্ষক
ফেসবুকে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমের মৃত্যু নিয়ে ‘অবমাননাকর’ পোস্ট দেয়ায় ডিজিটাল আইনের মামলায় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) বাংলা বিভাগের শিক্ষক সিরাজুম মনিরাকে ২০২০ সালের ১৩ জুন গ্রেফতার করা হয়৷ পোস্টটি দেয়ার কিছুক্ষণ পর তিনি তা মুছে দিয়েছিলেন৷
-
যেসব অভিযোগে ডিজিটাল আইনে মামলা
রাবি শিক্ষক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক কাজী জাহিদুর রহমানকে গতবছর ১৮ জুন গ্রেপ্তার করা হয়৷ পুলিশ কর্মকর্তা মো. গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমকে নিয়ে ফেসবুকে ‘আজেবাজে কথা লিখে কটূক্তির অভিযোগে’ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ বার্তা সংস্থা ডিপিএ বলছে, ২ জুন প্রকাশিত এক পোস্টে তিনি স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেছিলেন৷ যদিও নাসিমের নাম উল্লেখ করেননি৷ পোস্টটি তিনি পরে মুছেও দেন৷
-
যেসব অভিযোগে ডিজিটাল আইনে মামলা
নবম শ্রেণির ছাত্র ইমন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তির অভিযোগে ময়মনসিংহের ভালুকায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা এক মামলায় নবম শ্রেণির ছাত্র মো. ইমনকে ২০২০ সালের ২০ জুন গ্রেপ্তার করা হয়৷ এরপর তাকে কিশোর শোধনাগারে পাঠানো হয়৷ ভালুকার ওসি জানিয়েছেন, ইমন পরে পোস্টটি মুছে ক্ষমা চেয়েছিল৷
-
যেসব অভিযোগে ডিজিটাল আইনে মামলা
সুশান্ত দাশ গুপ্ত
‘আমার হবিগঞ্জ’ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক৷ এই পত্রিকায় স্থানীয় সাংসদ আবু জাহিরের অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর প্রকাশের জেরে ২০২০ সালের ২০ মে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সায়েদুজ্জামান জাহির৷ এর পরদিন সুশান্তকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ ১৪ জুন তিনি জামিন পান৷