শিশুর বিনোদনের জন্য প্রয়োজন মানসিক ও শারীরিক বিকাশ৷ সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ও পরিবেশে কতটা অনুকুল বা সরকার ও সমাজের কী পরিবর্তন দরকার – তা জানাতে গিয়ে আমাদের ফেসবুক পাতায় বন্ধু আকাশ ইকবাল তাঁর বক্তব্যটি তুলে ধরেছেন এভাবে:
‘‘বাংলাদেশের শিশু-কিশোরদের আলোচনার বিষয় হলো ‘ক্লোজ আপ ওয়ান' কিংবা হলিউড বা বলিউডের গল্প৷ খোলা মাঠে খেলাধুলা আর সুস্থ নির্মল আনন্দের পরিবর্তে আজ শিশু-কিশোরদের বিনোদনের মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে ভিডিও গেমস আর মোবাইল টিভি চ্যানেলের বিজ্ঞাপন ও মুভি৷ একা একা খেতে চাও তবে দরজা বন্ধ করে খাও, এমন বিজ্ঞাপনগুলো বন্ধুবৎসল শিশুদের কোমল মনকে চূড়ান্ত রকমের স্বার্থপরতার শিক্ষা দিচ্ছে৷ আমাদের দেশের শিশু-কিশোররা এখন নিজের দেশ কিংবা দেশের স্বাধীনতা বিষয়ক জ্ঞান রাখে না, যা টিভি অনুষ্ঠানের প্রশ্নত্তোর অনুষ্ঠান থেকে জানা যায়৷
-
শিশুরা খেলার মধ্য দিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়
শিশুদের অবসর সময়
সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য ছোট বয়স থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুদের অনেক কিছু শিখতে হয়, অনেক কিছু করতে হয়৷ তাই শিশুরা যাই করুক না কেন ওদের খেলার সময় প্রয়োজন৷ বন্ধুদের সাথে খেলার মধ্য দিয়েই যে ওরা সমস্ত স্ট্রেস এবং মানসিক চাপ থেকে বেরিয়ে আসতে পারে৷
-
শিশুরা খেলার মধ্য দিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়
টিভির সামনে আধঘণ্টার বেশি নয়!
টেলিভিশন, কম্পিউটার, ট্যাবলেট – এগুলো বিনোদন আর তথ্য দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানসিক চাপ বাড়ায়৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, একঘণ্টা কম্পিউটার বা টিভির সামনে বসে থাকার চেয়ে খোলা বাতাসে খেলাধুলা বা ব্যায়াম শিশুদের বেশি দরকার৷ আর তিন বছরের কম বয়সি শিশুদের দিনে আধঘণ্টার বেশি টিভি দেখা উচিত নয়৷
-
শিশুরা খেলার মধ্য দিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়
অ্যান্টি স্ট্রেস
বাড়ি স্ট্রেমুক্ত করতে ঘরে ফেরার পর সবাই কিছুক্ষণ সোফায় বসে আড্ডা দিন৷ তারপর খাবার টেবিলে সারাদিনের ঘটে যাওয়া ঘটনা বা জরুরি কিছু থাকলে, তা নিয়ে আলোচনা করুন৷ যে কোনো সমস্যা সমাধান একত্রে করলে অনেক সহজ হয়৷ শিশুরা ছোট থেকেই যেন এটা শেখে, তার চেষ্টা বড়দেরই করা উচিত৷
-
শিশুরা খেলার মধ্য দিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়
শিশুদের শিশুর মতো বড় হতে দিন
কিন্ডারগার্ডেনে শিশুদের ব্যক্তিত্ব গড়ে ওঠে৷ নিজেকে চেনা এবং অন্যে সাথে সম্পর্ক তৈরি করা সেখানেই শেখে শিশুরা৷ পায় সৃজনশীলতা বিকাশের সুযোগ৷ তাই লক্ষ্য রাখতে হবে তারা যেন নির্ভয়ে সব কিছু বলতে ও করতে পারে৷ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়াটা মূল লক্ষ্য নয়, জরুরি হলো আত্মবিশ্বাসী হতে পারা৷
-
শিশুরা খেলার মধ্য দিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়
খুঁজে বের করতে হবে...
প্রথমেই খুঁজে বের করতে হবে পড়াশোনা বা হোমওয়ার্ক করতে শিশুর মনোযোগ কখন সবচেয়ে বেশি৷ সরাসরি স্কুল থেকে আসার পর নাকি কিছুক্ষণ খেলার পর? সবচেয়ে বড় কথা – শিশুরা যাই করুক না কেন, মাঝে মাঝেই বিশ্রাম নিতে হবে তাদের৷ অর্থাৎ যে কোনো কাজের মাঝে কিছুক্ষণ হাঁচটাচলা, গান শোনা বা মুক্ত বাতাস সেবন করা৷ যা শুধু শিশুদের ক্ষেত্রে নয়, বড়দেরও প্রয়োজন৷
-
শিশুরা খেলার মধ্য দিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়
শিক্ষার ধরন
আজকের দিনের চাকরিজীবী মা-বাবার জীবন চলে অতি দ্রুতগতিতে এবং তাঁদের সাথে তাল মেলাতে গিয়ে শিশুরা হাঁপিয়ে ওঠে৷ শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সব কিছুই সন্তানদের শেখানোর চেষ্টা থাকেন বাবা-মা৷ তাই তাঁরা নামি-দামি আধুনিক কিন্ডারগর্ডেনগুলোতে সন্তানকে ভর্তি করেন৷ তবে কিন্ডারগার্টেন বা স্কুল ভবিষ্যত জীবনে শিশুর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথে একটা পাথেও মাত্র৷
-
শিশুরা খেলার মধ্য দিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়
খেলার ছলে শিক্ষা
জার্মানির বোখুম শহরের একটি স্কুলে পড়াশোনাটা নতুনভাবে বা খেলার ছলে সেখানো হয়৷ সেখানে ‘প্রোমোশন’ বা ভালো রেজাল্টই বড় কথা নয়৷ ছোট ছেলে-মেয়েরা কারিগরি ক্লাসে তরোয়াল তৈরি করতে শেখে সেখানে৷ খেলার ছলে শেখে নানা কায়দাকানুন৷ তাছাড়া প্রতিটি শিশুর কাজ করার ধরনও আলাদা৷ তাই শিশুরাই প্রস্তাব দেয়, তারা কী করতে চায় বা না চায়৷ শিশুদের ইচ্ছেকে পুরো দাম দেওয়া হয় এখানে৷
-
শিশুরা খেলার মধ্য দিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়
ভয় ছাড়া শিক্ষা
স্কুলে খুব ভালো ফল করতে হবে – এর জন্য কোনো চাপ সৃষ্টি করা উচিত নয়৷ কারণ এতে শিশুদের মধ্যে একটা ভয় তৈরি হয় আর ভয় মানুষের আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠতে সবচেয়ে বড় বাধা৷ তবে একটি কথা বাবা-মাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, প্রতিটি শিশুই আলাদা৷ অর্থাৎ সবার গ্রহণযোগ্যতা সমান নয়৷ ‘আমাদের সন্তানের চেয়ে অন্য বাচ্চার রেজাল্ট ভালো কেন?’ – এ প্রশ্ন কখনই করা উচিত নয়৷
-
শিশুরা খেলার মধ্য দিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়
ভয় মস্তিষ্ককে বিগড়ে দেয়
পরীক্ষার হলে সব কিছু ভুলে যাওয়াটা মোটেই নতুন নয়৷ একে আমরা ‘ব্ল্যাকআউট’ বলে জানি৷ এমনটা কিন্তু শুধুমাত্র ভয়ের কারণেই হয়ে থাকে৷ ‘‘ভয়ের সময় মানুষের শরীরে স্ট্রেস হরমোন ছড়িয়ে পড়ে এবং স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যায় বা বাঁধাপ্রাপ্ত হয়৷ অর্থাৎ শেখা বা জানা বিষয়ও মনে পড়ে না৷’’ বলেন জার্মানির মস্তিষ্ক গবেষক৷
-
শিশুরা খেলার মধ্য দিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়
শিশুদের আত্মবিশ্বাস গড়তে বড়দের ভূমিকা
বর্তমানে আমরা, অর্থাৎ বড়রা যে মানসিক চাপের মধ্যে জীবনযাপন করছি, তা ইচ্ছে করে নয়৷ পরিস্থিতি আমাদের বাধ্য করছে৷ তাই যতটা সম্ভব শিশুদের মানসিক চাপ থেকে দূরে রাখা প্রয়োজন৷ কারণ শিশু বয়সেই তৈরি হয় ব্যক্তিত্ব, তাদের আত্মবিশ্বাস, যা বড় হতে, সুস্থ মানুষ হতে অনেক বেশি প্রয়োজন৷
লেখক: নুরুননাহার সাত্তার
আগে স্কুলের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে তিন গোয়েন্দার বই কিংবা শখের স্ট্যাম্প কেনার প্রতিযোগিতা হতো৷ আর এখন টাকা জমানোর প্রতিযোগিতা চলে ভিডিও গেমস খেলা কিংবা অলিতে-গলিতে সহজলভ্য পর্নো পত্রিকা আর সিডি কেনার জন্য৷ টাকা কামানোর অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত কোম্পানিগুলো টিভি পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে এমন প্রভাব বিস্তার করছে৷ এখন স্কুল ছাত্রদের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে মোবাইল বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুদের মোবাইল ব্যাবহারের ক্ষেত্রে মা-বাবাদের সতর্ক থাকা উচিত৷ কারণ শিশুরা এখন চাইলে আধুনিক মোবাইল ব্যবহার করে কুরুচিপূর্ণ বিজ্ঞাপন কিংবা পর্নোগ্রাফির মতো খারাপ ভিডিও পাচ্ছে৷ এতে শিশু-কিশোররা বন্ধু-বান্ধব কিংবা ভাই-বোনের সম্পর্কে লালন করে বিকৃত অসুস্থ মানসিকতা৷''
তবে পাঠক রিদোয়ান আহমেদ হৃদয় মনে করেন, সবার আগে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা পাল্টাতে হবে৷ একজন যোগ্য ব্যক্তিকে শিক্ষামন্ত্রীর আসনে বসাতে হবে এবং শিক্ষাক্ষেত্রে সকল অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করতে হবে৷ তবেই এদেশের শিশুরা সব দিক দিয়ে সুশিক্ষিত হবে৷
অন্যদিকে মো. মুসফিকুর রহমান বাংলাদেশের শিক্ষকদের গুণাগুণ সম্পর্কে সন্দীহান৷ কারণ এখন নাকি শুধু স্কুল-নির্ভর পড়াশোনা করানো হয়৷ ফলে বিনোদনের সুযোগ থাকে না,
-
শিশুদের জন্য শিক্ষামূলক ৭টি জনপ্রিয় টিভি সিরিজ
সেসেমি স্ট্রিট
শিশুদের অন্যতম প্রিয় এই শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানে পরিবেশ বিষয়েও অনেক কিছু শেখানো হয়ে থাকে৷ যেমন পানি অপচয় করা ঠিক নয় কিংবা সবকিছু রিসাইকেল করা উচিত ইত্যাদি৷ মার্কিন জনপ্রিয় এই সিরিজটির বাংলা সংস্করণ ‘সিসিমপুর’ বাংলাদেশের শিশুদেরও বিনোদন দিচ্ছে৷ টুকটুকি, ইকরি, হালুম শিশুদের বেশ প্রিয়৷
-
শিশুদের জন্য শিক্ষামূলক ৭টি জনপ্রিয় টিভি সিরিজ
ক্যাপ্টেন প্ল্যানেট অ্যান্ড দ্য প্ল্যানেটিয়ার্স
মার্কিন এই টেলিভিশন সিরিজের মূল বিষয় ছিল পরিবেশ রক্ষা৷ সবুজ পৃথিবী গড়ে তোলা, সাগর ও সেখানকার প্রাণীদের দূষণ থেকে রক্ষা করা, পাখিদের দেখাশোনা করা ইত্যাদি নানান বিষয় তুলে ধরা হয়েছে অনুষ্ঠানটিতে৷
-
শিশুদের জন্য শিক্ষামূলক ৭টি জনপ্রিয় টিভি সিরিজ
দ্যা অক্টোনাটস
ব্রিটিশ এই অ্যানিমেটেড সিরিজের মাধ্যমে শিশুদের সাগর ও সেখানকার বাসিন্দাদের সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করা হয়েছে৷ একটি পোলার বেয়ারের নেতৃত্বে আটজনের একটি দলের সাগরের অন্যান্য প্রাণীদের হাত থেকে বেঁচে থাকার সংগ্রাম দেখানো হয়েছে এতে৷ দু’জন বিশিষ্ট জীববিজ্ঞানী এটি তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন যেন তথ্য সব ঠিক থাকে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
-
শিশুদের জন্য শিক্ষামূলক ৭টি জনপ্রিয় টিভি সিরিজ
দ্যা ওম্বলস
ছবি দেখেই বুঝতে পারছেন ‘ওম্বলস’ হচ্ছে একটি কল্পিত প্রাণী৷ ষাটের দশকে বিভিন্ন উপন্যাসে প্রথম এই প্রাণীদের কথা উল্লেখ করা হয়৷ পরবর্তীতে ব্রিটেনে তাদের নিয়ে একটি টেলিভিশন সিরিজ নির্মিত হয়৷ ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত প্রচারিত ঐ সিরিজে দেখানো হয়, লন্ডনে থাকা ওম্বলসরা পরিবেশ রক্ষায় আবর্জনা সংগ্রহ করে রিসাইকেল করছে৷
-
শিশুদের জন্য শিক্ষামূলক ৭টি জনপ্রিয় টিভি সিরিজ
দ্যা অ্যানিমেলস অফ ফার্দিং উড
মানুষ তার নিজের প্রয়োজনে বনজঙ্গল উজাড় করায় সেখানে বসবাসরত পশুপাখিদের কী সমস্যা হয় তা দেখানো হয়েছে এই অ্যানিমেটেড টিভি সিরিজে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
-
শিশুদের জন্য শিক্ষামূলক ৭টি জনপ্রিয় টিভি সিরিজ
বিল নাই দ্যা সায়েন্স গায়
বিজ্ঞানের জটিল বিষয়কে শিশুদের সামনে তুলে ধরতেন বিল গায়৷ এর মধ্যে ইকোলজি, পরিবেশ বিজ্ঞানের মতো বিষয়ও থাকতো৷ তাঁর অনুষ্ঠানটি ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত মার্কিন টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে৷ বর্তমানে বিভিন্ন সায়েন্স ভিডিওতে তাঁকে দেখা যায়, সেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয় নিয়েও তিনি আলোচনা করেন৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
-
শিশুদের জন্য শিক্ষামূলক ৭টি জনপ্রিয় টিভি সিরিজ
দ্যা ম্যাজিক স্কুল বাস
এই টিভি সিরিজে ফ্রিজল নামের একজন বিজ্ঞান শিক্ষককে দেখানো হয়েছে, যিনি সরীসৃপ, জলবায়ু পরিবর্তন সহ প্রকৃতির নানান বিষয় সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের জানাতে শিক্ষাসফরে নিয়ে যান৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
যার জন্য ছাত্ররাও নাকি সেরকমই হয়৷ আবদুর রহিমও মনে করেন, শিশুর বিনোদন ও শিশুর সুন্দর পৃথিবীর জন্য সবচেয়ে আগে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা পাল্টানো প্রয়োজন৷
মঈন আহমেদের ধারণা, বাংলাদেশের কোচিং সেন্টারের মালিকেরা নাকি সব ডাকাত৷ আওয়ামী লীগ, বিএনপি আর জামাত-শিবিরের ছাত্র-শিক্ষক নেতারা নাকি কোচিং সেন্টারগুলোর মালিক৷
তবে কামরুল হাসান মনে করেন, ‘‘শিশুকে তার মতো করে বড় হতে দেওয়া হোক৷''
আর পাঠক রবি হাসানের অনুরোধ, বাংলাদেশের শিশুদের জন্য ভালো হবে যদি হিন্দি ভাষার কার্টুনের চ্যানেলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ এ ব্যাপারে পাঠক ফাতেমা সুলতানা ও সরকার চন্দনও ডয়চে ভেলের পাঠক রবিউল হাসানকে সমর্থন করেছেন৷
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ
-
শিশুর মেরুদণ্ড ঠিক রাখতে সঠিক স্কুল ব্যাগ কিনুন
সঠিক ব্যাগ চাই
স্কুল মানেই বই, খাতা, কত কী সঙ্গে নিতে হয়৷ এসব বহন করার জন্য বাজারে রয়েছে কত সুন্দর সুন্দর ব্যাগ৷ ছোট্ট শিশুটির ওজনের সাথে ব্যাগের সাইজ, ওজন ঠিক আছে কিনা তা খুবই জরুরি৷ ব্যাগ বেশি বড় হলে, তাতে একগাদা বই খাতাসহ অন্যান্য জিনিস ঢুকিয়ে ভারি করে ফেললে, তা ছোট শিশুর ঘাড়, পিঠ এবং মেরুদণ্ডে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে৷ এতে শিশুর হাড়ের গঠনে ক্ষতি করতে পারে৷
-
শিশুর মেরুদণ্ড ঠিক রাখতে সঠিক স্কুল ব্যাগ কিনুন
ব্যাগের ওজন
১৯৯৫ সালে জার্মানিতে পিঠের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এজিআর নামের একটি সংস্থা তৈরি হয়৷ তাদের পরামর্শ, স্কুল ব্যাগ কেনার সময় সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে খালি ব্যাগের ওজন যেন ১.৩ কেজির বেশি না হয়৷ অর্থাৎ ব্যাগ যেন শিশুর কাছে লোড বা ‘বোঝা’ মনে না হয়৷ বোঝা ব্যাপারটা কিছুটা অনেক সময় নির্ভর করে শিশুর শরীরের ওজনের উপরও৷ স্বাস্থ্যবান শিশুর জন্য ওজন ততটা খারাপ না হলেও দুর্বল শিশুর জন্য তা অবশ্যই ক্ষতিকর৷
-
শিশুর মেরুদণ্ড ঠিক রাখতে সঠিক স্কুল ব্যাগ কিনুন
ব্যাগের বেল্ট
স্কুল ব্যাগের দু’পাশের বেল্টগুলো যেন ৪ সেন্টিমিটার চওড়া এবং নন-স্লিপ হয়, তাছাড়া বেল্টের প্যাড সামান্য মোটা ও ছোট-বড় করার ভালো সুবিধা থাকলে শিশুদের মেরুদণ্ডে চাপ কম পড়ে এবং শ্বাসকষ্টও কম হয়৷
-
শিশুর মেরুদণ্ড ঠিক রাখতে সঠিক স্কুল ব্যাগ কিনুন
ব্যাগের ভেতরে কী?
শুধু সুন্দর এবং উপযুক্ত ব্যাগ হলেই যথেষ্ট নয়৷ লক্ষ্য রাখতে হবে, ব্যাগের ভেতরে যেন প্রয়োজনের বেশি কোনো জিনিসই না ঢোকানো হয়৷ অর্থাৎ প্রতিদিনই নতুন করে প্যাকিং করতে হবে৷ শুধু সেদিনের প্রয়োজনীয় বই খাতা ও দরকারি জিনিসই থাকবে পিঠে নেওয়ার ব্যাগের ভেতর – তার বেশি কিছুই নয়! বাড়তি ওজন মানেই শিশুর মেরুদণ্ড, ঘাড়, পিঠের জন্য বাড়তি চাপ, এতে ক্ষতি হয়ে যেতে পারে শিশুর স্বাস্থ্যের৷
-
শিশুর মেরুদণ্ড ঠিক রাখতে সঠিক স্কুল ব্যাগ কিনুন
ব্যাগের হ্যান্ডেল
ছোট শিশুদের স্কুল ব্যাগের হ্যান্ডেলটিও হতে হবে আরামদায়ক, যাতে ছোট ছোট শিশুরা সহজে হ্যান্ডেল করতে পারে৷
-
শিশুর মেরুদণ্ড ঠিক রাখতে সঠিক স্কুল ব্যাগ কিনুন
পছন্দের ব্যাকপ্যাক
প্রাইমারী স্কুল পর্যন্ত বাচ্চারা সাধারণ স্কুল ব্যাগ নিতে তেমন আপত্তি না করলেও একটু বড় হওয়ার সাথে সাথে ওদের বন্ধুদের মতো নিজেদের পছন্দের ব্যাগই কিনতে চায়৷ এক্ষেত্রে এজিআর সংস্থার পরামর্শ – অসুবিধা নেই, আজকাল বাজারে স্বাস্থ্যসম্মত বা পিঠের জন্য নমনীয় অনেক ব্যাকপ্যাকই পাওয়া যায়৷
লেখক: নুরুননাহার সাত্তার