‘‘সব সময় আতঙ্কে থাকি কখন কী হয়ে যায় '' | পাঠক ভাবনা | DW | 16.01.2015
  1. Inhalt
  2. Navigation
  3. Weitere Inhalte
  4. Metanavigation
  5. Suche
  6. Choose from 30 Languages

পাঠক ভাবনা

‘‘সব সময় আতঙ্কে থাকি কখন কী হয়ে যায় ''

সহিংসতার আতঙ্কে বাংলাদেশের জনজীবন অনিশ্চিত, এই পরিস্থিতিতে ফেসবুক পাঠকরা আতঙ্কিত কি না – এই প্রশ্নের উত্তরে শুধু আতঙ্কিত নয় , এর পেছনের রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষে-বিপক্ষেও মত প্রকাশ করেছেন তাঁরা৷

আমাদের বাংলাদেশ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দিনে কিছুটা কম হলেও রাতে আতঙ্কের নগরীতে পরিণত হয় ঢাকা৷ ফেসবুকে ডয়চে ভেলের পাঠক বন্ধুদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিলো বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁরা কি আতঙ্কিত? প্রতিবেদনটি পড়ে পাঠক আরাফাত মাহমুদ বাবুর মতো অনেকেই জানিয়েছেন, ‘‘সব সময় আতঙ্কে থাকি ৷'' পাঠকদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আবার এর কারণ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোকেই দোষারোপ করেছেন ফেসবুকে মন্তব্যের ঘরে৷

২৬, ৫৭৬ জন পাঠক দেখেছেন এই প্রতিবেদনটি৷ ১,৯১০ লাইক করেছেন আর যারা মন্তব্য করেছেন তাদের সংখ্যাও একেবারে কম নয়, প্রায় ৪০জন৷

তাঁদের একজন যেমন মাহবুবুন নূর লিখেছেন, ‘‘বুধবার বিকেলে নবীনগর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে বের হয়েছি আপার বাসায় যাবো৷ ১০-১৫ মিনিট পর মা ফোন করে বলল ঘরে ফিরে যাও, ঢাকায় গণ্ডগোল হচ্ছে৷ শুধু আমি নিজে নই পরিবারের সবাই একে অন্যের জন্য আতঙ্কিত৷'' তবে তিনি আশাবাদী৷ লিখেছেন, ‘‘অবিলম্বে আলোচনার দুয়ার উন্মোচন করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে শান্তি ফিরে আসুক এই প্রতীক্ষায় দিন গুনছি৷''

পাঠক রাকিব হাসানের মন্তব্য, ‘‘ঢাকার জনগণের জন্যই তো এত কষ্ট হচ্ছে৷ সারা দেশের মানুষ বের হয়, ওদের বের হতে কী হয় ? ওরা বের হলেই তো সরকার পতন ঘটে৷''

হাসিবুল লিমন বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে খুবই বিরক্ত৷ রাজনীতিকদের ওপরও তাঁর অনেক রাগ৷ তিনি নতুন করে দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেন, লিখেছেন, ‘‘বাঙালির জীবন খুব সস্তা, সবাই বাঙালির সাথে খেলা করে৷ এমনকি সরকার, বিরোধীদল সবাই৷ আল্লাহ্‌ সবাইকে হেদায়েত দান করুন৷ আসুন সবাই লোভ লালসা ত্যাগ করে একটা সবার অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করুন৷ দেশ আমাদের সবার, শুধু আপনাদের কয়েক'শ জনের নয়৷ আমরা ১৬ কোটি খেপে গেলে কিন্তু আপনাদের কারো চুলের টুকরাও খুঁজে পাওয়া যাবে না৷ আপনাদের বাবা, স্বামী দেশের জন্য অনেক করেছে কিন্তু সেটা আজ থেকে ৩০/৪০ বছর আগে৷ ওটা নিয়ে ভাবার সময় আমাদের বর্তমানের নাই, আমরা চাই সামনে এগিয়ে যেতে কিন্তু আপনারা আওয়ামী লীগ, বিএনপিই হচ্ছেন আমাদের বড় বাধা৷ আসুন সবাই একসাথে সব খারাপের বিরুদ্ধে কথা বলি৷ আমরা ১৬ কোটিই পারি দেশটাকে রক্ষা করতে মনে রাখবেন ওরা মাত্র কয়েকশ৷ ১৬ কোটি মানুষের সামনে কয়েক লাখ অস্ত্র কিছুই না৷ আসুন আমাদের দেশ আমরাই গড়বো৷ আমরাই পারি পুরাতন ক্যাচাল থেকে দেশকে মুক্ত করে সামনে এগিয়ে নিতে৷''

রফিকুল ইসলাম শেখ জানিয়েছেন তার কথা এভাবে, ‘‘আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই৷ কারণ জনগণ শুধু একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠার স্বার্থে ইচ্ছে করেই এসব করছে৷''

পাঠক সাদ তাজ দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণ হিসেবে নিজের জাতিকেই দোষারোপ করছেন৷ তাঁর ভাষায় ‘‘আমরা বড়ই দূর্ভাগা জাতি৷ আমরা আমাদেরকে হিংসা করি, নিজেরা নিজেদের হত্যা করি, নিজেরা নিজে নিজে আদিম যুগে ফিরে যাচ্ছি!!! দু'দল আজ আমাদের জাতিকে দুইটা ভাগে ভাগ করে দিয়েছে যা কোনো দিনও আর এক হবে না৷ তাই আমরা মানুষ (ভাল) হবো কবে জানি না!!!''

অন্যদিকে আজিজুল আলমের মত আতঙ্কিত হওয়ার মতো, তাঁর জানিয়েছেন ‘‘মোটেই আতঙ্কিত নই৷ বরং নাশকতা কারীরা আতঙ্কিত আর এ সব নাশকতার সাজা হতে পারে গুলি৷ বিকল্প পথ দেখি না৷''

জাহাঙ্গীর খান মামুন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে ঠোঁট মিলিয়ে জানিয়েছেন, সাড়ে সাত কোটি বাঙালির হে মুগ্ধ জননী রেখেছো বাঙালি করে মানুষ করোনি৷ রবি ঠাকুর সঠিক বলেছিলেন, হে এমন জাতি যে তাকে যতো ঠেঙাবে সে তার পিছে ততো দৌড়াবে৷ রাজাকাররা পাকিস্থানকে ভুলতে পারে না, কেউ কেউ এখনো ব্রিটিশ শাসনকে ভাল শাসন মনে করেন আর এই বাঙালি জাতি জমায়াত, জাতীয় পাটি, বিএনপি, আওয়ামী লীগকে ভুলতে পারলো না৷ আসলে আমরা প্রভুভক্ত বাঙালি৷ যতোই ঠ্যাঙানি দিবে ততোই তোমার পিছে দৌড়াবে৷''মোস্তাফিজুর রহমান, জাভেদ রহমান, আবুল হাসান, হাসান জিন্নাহ চারজনই বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্কিত৷

তোমার আমার ঠিকানার মত, ‘‘প্রতিদিন মানুষ মরছে৷ অবরোধের আগুনে পুড়িয়ে দেশ ছারখার করা হচ্ছে৷ রংপুরে বাসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারা হোল৷ সরকার শুধু বলছে কঠোর ব্যবস্থা নিবে, কোথায়? মানুষের আর্তনাদ বলে দেয় জরুরি আইন জারি ছাড়া দেশ ধ্বংস কারীদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য আর কোনো বিকল্প নেই৷''

তানভীর আহমেদ জানিয়েছেন, ‘‘ঘরে বসেও আতঙ্কে থাকি,,ইদানীং পুলিশ ঘর থেকে ডেকে নিয়ে গুলি করে৷ আবার জামাত শিবির বলে গুলে করে লাশ হারিয়ে ফেলার হুমকি দেয়৷ আমার একটা বড় দুঃখ, সরকারকে প্রশ্ন করেও কখনো উত্তর পেলাম না৷''

সৈয়দ সানোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, সত্যি বলতে রাত নামলেই বাসে উঠতেই ভয় লাগে৷ আর দেশ যেখানে ভালোই এগিয়ে চলছে সেখানে বিএনপি র অযথা ক্ষমতায় যাওয়ার খায়েশ এর বলি হচ্ছি আমরা৷

রেজাউল হাসান লিখেছেন, ‘‘আতঙ্ক নিয়ে চলা ফেরা করি সবাই৷ কখন কে কোন বিপদে পড়ি ....৷''

বাপি সাঈদের সোজা উত্তর , ‘হ্যাঁ আমি আতঙ্কিত৷''

সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

নির্বাচিত প্রতিবেদন