ডিডাব্লিউ’র ৬০ বছর পূর্তিতে মহাপরিচালক এরিক বেটারমান | ডিডাব্লিউ'কে জানুন | DW | 03.05.2013
  1. Inhalt
  2. Navigation
  3. Weitere Inhalte
  4. Metanavigation
  5. Suche
  6. Choose from 30 Languages

ডিডাব্লিউ'কে জানুন

ডিডাব্লিউ’র ৬০ বছর পূর্তিতে মহাপরিচালক এরিক বেটারমান

১৯৫৩ সালের ৩রা মে ডয়চে ভেলে প্রথম প্রচার শুরু করে৷ আন্তর্জাতিক সম্প্রচার কেন্দ্রটি আজ কোথায় দাঁড়িয়ে আর সহস্রাব্দের শেষে ডয়চে ভেলেকে কোন বিষয়টি সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেছে? প্রশ্ন করা হয় মহাপরিচালক এরিক বেটারমানকে...

বেটারমান: রাজনৈতিক দিক দিয়ে নিঃসন্দেহে ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টম্বরের ঘটনা৷ এই ঘটনার পরিপ্রক্ষিতে ডয়চে ভেলের তৎপরতা বুঝিয়ে দিয়েছে যে, আমাদের দেশ তো বটেই, বিশ্বের জন্য এই ধরনের একটা সম্প্রচার কেন্দ্র কতটা জরুরি৷ এছাড়া কারিগরি দিক দিয়ে দ্রুত উন্নয়ন বিশ্বব্যাপী একটা বিপ্লব এনে দিয়েছে৷ উত্পাদন, প্রযুক্তির সুযোগ সুবিধা, ব্যবহারকারীদের অভ্যাস, সব দিক কিছুতেই পরিবর্তন এসেছে৷

সাংবাদিকদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বলতে কী বোঝায়?

বেটারমান: আমরা চাই বিশ্বব্যাপী মানুষের কাছে পৌঁছাতে৷ ৩০টি ভাষায় সাংবাদিকদের আমরা এজন্য প্রস্তুত করি৷ ডয়চে ভেলের নীতিমালা অনুযায়ী বিভিন্ন বিভাগকে চলতে হয়৷ তবে আমাদের দর্শক, শ্রোতা ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের আকাক্ষ্খা ও চাহিদাকেই আমরা বেশি গুরুত্ব দেই৷ বিশ্বের নানা অঞ্চল ও ভাষার সঙ্গে খাপ খাইয়ে আমাদের তা করতে হয়৷ এজন্য আমারা এত বছর শর্ট ওয়েভের ওপর জোর দিয়েছি, স্যাটেলাইট টেলিভিশনের প্রসার ঘটিয়েছি৷ আর তারপর, ইন্টারনেটের সুযোগ আসার সাথে সাথেই এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়েছি আমরা৷ আজ আমরা মাল্টিমিডিয়াল একটা প্রতিষ্ঠান৷ টেলিভিশনের ক্ষেত্রেও আমরা আমাদের কর্মপরিধি বাড়িয়েছি৷ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ এবং ব্রাজিলে সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে টিভি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান প্রচার করছি আমরা৷

আইনগত নির্দেশনা, সরকারি অনুদান – তবুও ৬০ বছর ধরে সাংবাদিকরা অনেকটাই স্বাধীন৷ ব্যাপারটা তো কিছুটা পরস্পরবিরোধী৷ এক্ষেত্রে ডয়চে ভেলে তার বিশ্বাসযোগ্যতা কী প্রতিষ্ঠিত করতে পারছে?

বেটারমান: সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত স্বায়ত্তশাসিত প্রচার মাধ্যম হিসাবে আমাদের বেশ সুবিধা রয়েছে৷ আমরা একদিকে অভ্যন্তরীণ প্রচারমাধ্যমের মতই স্বাধীনতা ভোগ করতে পারি৷ অন্যদিকে মৌলিক আইনের পঞ্চম ধারা অনুযায়ী সুরক্ষাও পেয়ে থাকি৷ তাই দুটি বিষয়কে সাংঘর্ষিক বলা যায় না৷ সংবাদ পরিবেশনে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে আমরা সবসময় সচেষ্ট৷ এ কারণে আমরা গত দশকগুলিতে বিশ্বাসযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য তথ্য সরবরাহকারী হিসাবে নাম করতে পেরেছি৷ এছাড়া, আমরা এমন সব মানুষের কথাও বলে থাকি, যাঁরা নিজ দেশে নিগৃহীত, অত্যাচারিত৷ যেমন চীনের সরকারের সমালোচক সাহিত্যিক ও শিল্পী, ইরান ও আরব দেশের অ্যাক্টিভিস্টদের কথা তুলে ধরি আমরা৷

এ জন্যই কী বিশ্বব্যাপী ডয়চে ভেলে একাডেমির এত চাহিদা?

বেটারমান: আমরা প্রায় ৫০ বছর ধরে মুক্ত ও স্বচ্ছ মিডিয়া সিস্টেমকে উত্সাহিত করার চেষ্টা করছি৷ এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন মন্ত্রণালয় আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী৷ এক সাথে আমরা উন্নয়নশীল দেশগুলিতে সাংবাদিকতার মান ও মিডিয়ার দক্ষতা বাড়াতে চেষ্টা করছি৷ যেমন আমরা তিউনেশিয়া ও সিরিয়াতেও সক্রিয়৷ মিয়ানমারকে মুক্ত হওয়ার পথে সাহায্য করছি আমরা৷ ল্যাটিন অ্যামেরিকার দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্পগুলিতেও কাজ করছি৷ বলা বাহুল্য, সাংবাদিকদের উচ্চ প্রশিক্ষণ দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য নয়৷ বৈষম্যের শিকার মানুষজনকে তথ্য সংগ্রহের পথটিও খুলে দিতে চাই আমরা৷ কিন্তু চাহিদার তুলনায় আমাদের সব ইচ্ছা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না৷ বর্তমানে আমাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে প্রতিবছর ৩০০০ জন অংশ নিচ্ছেন৷ আন্তর্জাতিক মিডিয়ার উন্নয়নে ডয়চে ভেলেকে শীর্ষ স্থানীয় এক প্রতিষ্ঠান বলা যায়৷

ডয়চে ভেলে শর্ট ওয়েভ প্রচার মাধ্যম থেকে একটি মাল্টিমিডিয়া প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে৷ এটা কী পরিবর্তনের একটা দাবি?

বেটারমান: ১৯৫৩ সাল থেকে আন্তর্জাতিক বেতার ও যোগাযোগের মাধ্যমে দ্রুত সবকিছুর পরিবর্তন হচ্ছে৷ কোনো প্রচার মাধ্যম যদি এর সাথে তাল মিলিয়ে চলতে না পারে, তা হলে দ্রুতই সংযোগ হারিয়ে ফেলবে৷ আমরা শুরু থেকেই ডিজিটাল প্রযুক্তির ওপর জোর দিয়েছে, দিচ্ছি৷ স্বায়ত্তশাসিত বেতার কেন্দ্রগুলির মধ্যে আমরাই প্রথমে ইন্টারনেট আরম্ভ করি৷ আজ কেউ শিক্ষানবিশ সাংবাদিক হিসাবে প্রশিক্ষণ নিতে এলে ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, অনলাইন সবক্ষেত্রেই পারদর্শী হয়ে ওঠেন৷ অন্যদিকে, এমন সব প্রোগ্রাম আমাদের বাদ দিতে হয়েছে, যে ক্ষেত্রে মানুষের তেমন আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না৷ যেমন অনেক বেতার প্রোগ্রাম ও শর্ট ওয়েভে সম্প্রচার বন্ধ করে দিতে হয়েছে৷ যাতে বাঁচানো অর্থটা টিভি ও ইন্টারনেটের কাজে লাগানো যায়৷

ডয়চে ভেলের ৬০ বছরের জন্মদিনে কোন উপহারটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে আপনি মনে করেন?

বেটারমান: আমি এখানে রাজনৈতিক ও সামাজিক একটা ঐক্যমত্য আশা করি, যাতে জার্মানি পিছিয়ে না পড়ে৷ আমরা জার্মানির সবচেয়ে ভালো দিকটা তুলে ধরতে চাই৷ মিডিয়া জগতের বৈচিত্র্য ও মানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই৷ নিউ ইয়র্ক, সিঙ্গাপুর, কায়রো, বুয়েনোস আইরেস-এ অবস্থিত আমাদের টার্গেট গ্রুপের সঙ্গে মিলে একত্রে এগিয়ে যেতে চাই আমরা৷ আর এসব ইচ্ছা যদি এই জয়ন্তীর বছর পূর্ণ হয়, সেটাই হবে আমার জন্য সবচেয়ে সুন্দর উপহার৷

নির্বাচিত প্রতিবেদন