‘ডয়চে ভেলে’ – আমার জীবনের একটি অঙ্গ’ | পাঠক ভাবনা | DW | 04.03.2013
  1. Inhalt
  2. Navigation
  3. Weitere Inhalte
  4. Metanavigation
  5. Suche
  6. Choose from 30 Languages

পাঠক ভাবনা

‘ডয়চে ভেলে’ – আমার জীবনের একটি অঙ্গ’

শেষ ‘ইনবক্স’টি শুনতে শুনতে চোখে জল চলে আসছিলো৷ দীর্ঘ ২২ বছরের কত স্মৃতি মনে পরে গেলো, সারা জীবন তা মনে থাকবে, কোনোদিন ভুলবোনা৷ আমার জীবনের একটি অঙ্গ ছিলো ডয়চে ভেলের বাংলা অনুষ্ঠান৷

শর্টওয়েভ বন্ধ হয়ে যাবার পর প্রতিবাদে নীরব শ্রোতা হয়ে শুধু আরএসএস অডিও ফিড সংগ্রহ করে চলছিলো৷ কিন্তু এবার তো আর শোনা যাবেনা৷ যাই হোক আপনাদের সাথে একটা আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো, আপনারা ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন – এই কামনা করি৷ স্বপন চক্রবর্তী, কলকাতা, ভারত থেকে বহুদিন পরে আমাদের কাছে এই ই-মেলটি পাঠিয়েছেন৷

পুরনো বন্ধু আরো লিখেছেন, দু'টি স্মৃতি মনে পড়ে গেল৷ ‘না বলে আশ মিটছে না'৷

নেপাল সীমান্তের ভারতের গ্রামে কাজে গেছি৷ পাশের নেপালের ধনগদিতে ঘুরতে গিয়ে শেষ বাস মিস করে আর রাতে ফেরা হলোনা৷ কিন্তু পরদিন সকালে ‘অ্যান্টেনা' অনুষ্ঠান৷ মিস করা যাবেনা৷ কারণ তখন তো আর অনলাইন বা পরে শোনার ব্যবস্থা ছিলনা৷ পরদিন সকালে খুব ভোরে উঠে খুঁজে বার করলাম এক মুদির দোকানে রেডিও চলছে৷ অনেক পটিয়ে লোকটি রাজি হলো একটু শুনতে দিতে৷ শোনা হলো ‘অ্যান্টেনা'৷ তারপর যখন তাকে বললাম যে এই যে গলাটি শুনলেন এটা আমারই৷ গ্রাম্য লোকটির মুখের অবয়ব /ভাসা পাল্টে গেল৷ ফিরে এসে শুনতে হলো সঙ্গীদের গালাগাল৷ কিন্তু বলা তো যাবেনা যে রেডিও শুনতে বেরিয়েছিলাম৷

সেবার হলদিয়াতে সকালে বাংলা অনুষ্ঠান শুনতে শুনতে প্রকৃতির ডাককে আর উপেক্ষা করা যাচ্ছিল না৷ বাধ্য হলাম রেডিওকে টয়লেট-এ সঙ্গী করতে৷ আজও যেখানেই যাই ব্যাগের মধ্যে রেডিওটি থাকবেই৷

বন্ধুরা, আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন৷ আপনাদের সবাইকেই আমরা আগামীতেও সঙ্গী হিসেবে পেতে চাই৷ থাকবেন তো ?


এতো সহজে কিন্তু আপনাদের আমরা ছাড়ছিনা! আমরা আগামীতে জানতে চাই আমাদের ওয়েবসাইটের বিভিন্ন প্রতিবেদন এবং টেলিভিশন অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মূল্যবান মতামত৷

জামায়াত শিবিরের সন্ত্রাসীরা সংখ্যালঘু নির্যাতনের মাধ্যমে নতুন করে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছে৷ এ দেশে সব সম্প্রদায়ের মানুষের বাস করার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে৷ সেই অধিকার যারা বল প্রয়োগ করে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিতে চায়, তারা দেশের শত্রু৷ তাদের শক্ত হাতে দমন করা উচিত বলে আমরা মনে করি৷ আমরা আশা করব, দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে৷ এই ই-মেলটি পাঠিয়েছেন শ্রোতাবন্ধু ফয়সাল আহমেদ৷

১/৩/২০১৩ তারিখের সকালের অধিবেশন শুনে এই চিঠি লিখছি৷ আজকের অনুষ্ঠানে সানাউল হকের কথায় জানলাম সংখ্যালঘু মানুষের সাক্ষ্য দিতে না আসায় মৌলানা দিলওয়ার হোসেন সাইদির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের ২০ টি অভিযোগের মধ্যে ১২টি অভিযোগই প্রমাণ করা যায়নি৷ এ কথা শুনে আশঙ্কিত বোধ করছি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের কথা ভেবে৷ মুক্তিযুদ্ধের সময় সবচেয়ে অত্যাচারিত হয়েছে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী৷ মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল আলম হাওলাদারের সাক্ষাৎকারেও সেটা বোঝা গেল৷ সাক্ষাৎকারের একটা অংশ শুনে চোখের জল ধরে রাখা যায়নি, যেখানে উনি মধুসূদন ঘরামির হতভাগিনী স্ত্রী'র কথা এবং গৌরাঙ্গ সাহার বোনের কথা বলছিলেন৷

মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকারদের হাতে হিন্দু মুসলমান সবাইকেই অত্যাচারিত হতে হয়েছে ঠিকই, কিন্তু ইজ্জত দিতে হয়েছে প্রায় সব ক্ষেত্রেই হিন্দু নারীকে, ধর্মও বিসর্জন দিতে হয়েছে শুধুমাত্র হিন্দুকেই৷ মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশে তো এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়া উচিত ছিল৷ তাহলে আজও কেন একজন হিন্দু সাক্ষ্য দিতে আসতে ভয় পান? আজও কেন রামুর বৌদ্ধ পল্লী বিনা কারণে হামলার শিকার হয়৷ যে কোন হাঙ্গামায় কেন ‘সফট টার্গেট' হন শুধু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ? মুক্তিযুদ্ধের শহীদেরা তো এমনটা চাননি৷

তাই আজকে যখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পুনর্জাগরণে বাংলাদেশের তরুণ সমাজ দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছে, তখন তাদেরকে এটাও ভাবতে হবে আগামীকালের বাংলাদেশে একজন সংখ্যালঘু নারীকেও যেন শুধুমাত্র সংখ্যালঘু হওয়ার অপরাধে ধর্ষিতা হতে না হয়৷ আমরা বাঙালি হলেও আমরা তো সম্পূর্ণ আলাদা এক রাষ্ট্রের নাগরিক৷ আমরা শুধু ওপার বাংলার ভাইবোনেদের দুঃখে কষ্টই পেতে পারি আর শুভকামনা করতে পারি শাহবাগ পরবর্তী নতুন বাংলাদেশের সবাই যেন জাতিধর্ম নির্বিশেষে সুখে না হোক, অন্তত শান্তিতে থাকতে পারে৷

অন্যান্য অনুষ্ঠানের কথা আজ আর লিখছি না৷ শুধু জানাই ‘সবুজ পৃথিবী'তে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্জ্য থেকে জ্বালানি তৈরির কথা জানতে পেরে ভালো লাগল এমনিতে মিথেন অবশ্যই পরিবেশের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর গ্রিন হাউস গ্যাস৷ কিন্তু একে মুক্ত অবস্থায় পরিবেশে মিশতে না দিয়ে যদি জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা যায় তাহলে এটি ভীষণভাবে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি৷ কারণ এর দহনে শুধু কার্বন ডাই অক্সাইড ও জল ছাড়া কিছু উৎপন্ন হয় না৷ ভারত বাংলাদেশ সহ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে মিথেন বিকল্প জ্বালানী হতে পারে৷ এতে জৈব বর্জ্য ম্যানেজমেন্টের সমস্যারও সুরাহা হবে৷ প্রতিবেদনটির জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ৷ নমস্কারান্তে ইতি সুখময় মাজী, গঙ্গাজলঘাটী, বাঁকুড়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত৷

ধন্যবাদ সবাইকে৷

সংকলন: নুরননাহার সাত্তার

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

নির্বাচিত প্রতিবেদন