‘...আমরা আশা করছি এর একটা ভালো সুরাহা হবে, যাতে মানুষগুলো তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে৷' ঠিক এভাবেই ই-মেলটি লিখে পাঠিয়েছেন ঢাকা সেনানিবাস থেকে বন্ধু মো. সোহেল রানা হৃদয়৷
সমাজকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে চিরকালই এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়ে অসংখ্য শ্রোতাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছে ডয়চে ভেলের বাংলাসহ অন্যান্য বিভাগ৷ এই প্রচেষ্টা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে চিরকালই থাকুক এই কামনা করি৷ লিখেছেন হামিম হোসেন মন্ডল (বুলবুল), ঝাউবনা, নওদা, মুর্শিদাবাদ থেকে৷
-
জার্মানদের জন্মদিন পালন
‘জন্ম নিবন্ধন সনদ’
একজন শিশু পৃথিবীর আলো দেখার সাথে সাথে জন্মের দিন, তারিখ, বছর, বার, জায়গা, ওজন, উচ্চতা সবই নিবন্ধন করা হয়৷ আর সেজন্যই জার্মানিতে প্রতিটি মানুষেরই ‘জন্ম নিবন্ধন সনদ’ থাকে৷ তাই জার্মান নাগরিক বা জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করা কোনো মানুষের জন্মের দিন-তারিখ নিয়ে কোনো দ্বিমত থাকেনা৷
-
জার্মানদের জন্মদিন পালন
শিশু বয়স থেকেই জন্মদিন পালন
প্রথম দু’বছর শিশুরা নিজের জন্মদিন সেভাবে বুঝতে না পারলেও সাধারণত তিন বছর বয়স থেকে বুঝতে পারে এবং নিজের জন্মদিন পালনে আগ্রহী হয়৷
-
জার্মানদের জন্মদিন পালন
কিন্ডারগার্টেনে জন্মদিন পালন
শিশুর জন্মদিনের দিন মা-বাবাকে সব বাচ্চাদের জন্য কেক বা এ ধরনের কিছু খাবার কিন্ডারগার্টেনে নিয়ে যেতে হয়৷ শিশুর বাবা-মা চলে যাওয়ার পর শুধু বাচ্চাদের নিয়ে টিচাররা কেক কাটেন, আনন্দ করেন৷ যে শিশুর জন্মদিন, তাকে কোলে নিয়ে আদর করে ভালোভাবেই বুঝিয়ে দেওয়া হয় যে দিনটি তার জন্য একটি বিশেষ দিন অর্থাৎ ‘জন্মদিন’৷
-
জার্মানদের জন্মদিন পালন
হোমওয়ার্ক নেই
প্রাইমারি স্কুলের বাচ্চারাও অনেক আনন্দ করে মজা করে জন্মদিনে৷ তাদের স্কুলে কেকে নিয়ে যেতে হয়না৷ কিন্তু যার জন্মদিন, তাকে সেদিন স্কুল থেকে হোমওয়ার্ক করতে দেওয়া হয়না৷ তবে তারা স্কুলের প্রিয় বন্ধুদের বাড়িতে ডেকে জন্মদিন পালন করে৷ বাচ্চাদের জন্মদিনে জার্মানিতে কিন্তু শুধু বাচ্চারাই নিমন্ত্রিত৷ জন্মদিনের পুরো আনন্দটা শুধুই ‘ওদেরই জন্য’৷
-
জার্মানদের জন্মদিন পালন
প্রাপ্তবয়স্কের স্বাধীনতা
জার্মানিতে ১৮ বছর বয়স হলে তাকে প্রাপ্তবয়স্ক বলে ধরা হয়৷ ১৮তে স্বাধীনভাবে গাড়ি চালানোর অনুমতি পায়, ভোট দিতে পারে৷ ১৮ হলে অন্যান্য অনেক সিদ্ধান্তই নিজে নেওয়ার অধিকার হয়ে যায়, মা-বাবার অনুমতি ছাড়াই৷ তবে গাড়ি চালানো এবং অন্য কোথাও বাসা ভাড়া নিয়ে থাকা – এই দুটোর জন্যই মনে হয় বেশি অপেক্ষা করে থাকে ১৮ বয়সের নীচের তরুণরা৷ তাই স্বাধীনতার স্বাদ ভোগ করার আগ্রহে ১৮ বছর পালন করা হয় বেশ জাঁকজমকভাবে৷
-
জার্মানদের জন্মদিন পালন
রাউন্ড ফিগার
ছোটবেলায় তেমন গুরুত্বপূর্ণ না হলেও পরের দিকে অর্থাৎ ৩০, ৪০, ৫০ অর্থাৎ যত বয়স বাড়ে, ততটাই গুরুত্ব পায় জন্মদিনের অনুষ্ঠান৷
-
জার্মানদের জন্মদিন পালন
পরিবারের ১০০তম জন্মদিন
ছেলে-মেয়ে এবং মা-বাবা, অর্থাৎ পুরো পরিবার মিলে যখন ১০০ বছর বা ১১০, ১২০ বছর পূর্ণ করে, তখনও অনেক সময় খুব জাঁকজমকভাবে সেটা পালন করা হয়৷ তবে এরকম জন্মদিনে নিমন্ত্রিতদের খানিকটা সমস্যা হয়ে যায় উপহার খুঁজে পেতে৷ জার্মানরা কখনো জন্মদিনের আগে জন্মদিনের উৎসব পালন করেননা, তবে পরে পছন্দমতো কোনো ছুটির দিনে পালন করেন৷
-
জার্মানদের জন্মদিন পালন
জন্মদিনের শুভেচ্ছা
বন্ধু, আত্মীয়, অনাত্মীয় ছাড়াও এখানে বিভিন্ন ব্যাংক, বিমা কোম্পানি বা বড় বড় দোকানগুলো থেকেও জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো হয়ে থাকে কার্ডের মাধ্যমে৷ আর আজকের এই ইন্টারনেট আর ফেসবুকের যুগে তো শুভেচ্ছা জানানোর জন্য তেমন বন্ধুত্বও হতে হয়না৷
-
জার্মানদের জন্মদিন পালন
পুরোনো বন্ধুত্ব ঝালিয়ে নেওয়া
অনেকের সাথে হয়তো বহুদিন যোগাযোগ নেই৷ সেই পুরোনো বন্ধুত্ব আবার ঝালিয়ে নিতে জন্মদিনের তারিখটি আগে থেকে ক্যালেন্ডারে লিখে রেখে সেদিন টেলিফোন করে বা কার্ড পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানায় অনেক জার্মান৷ প্রিয়জনদের জন্মদিন লিখে রাখার জন্য বিশেষ ক্যালেন্ডারও পাওয়া যায় জার্মানিতে৷
-
জার্মানদের জন্মদিন পালন
মেয়রের ফুলের শুভেচ্ছা
জার্মানিতে কারো ১০০ বছর পূর্ণ হলে তাঁকে শহরের মেয়র ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে থাকেন৷
-
জার্মানদের জন্মদিন পালন
জন্মদিনের উপহার
নানাজনে নানাকিছু উপহার দেয় জন্মদিনে৷ তবে ফুল, চকলেট আর মদ দিতে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় বড়দের ক্ষেত্রে৷ আজকের দিনে ছোটদের বেলায় তো উপহারের শেষ নেই৷ তবে জার্মানিতে আরেকটা রীতি রয়েছে৷ যার জন্মদিন, তার কাছ জানতে চাওয়া হয়, সে কী পেতে চায় বা তার কী জিনিস দরকার৷
লেখক: নুরুননাহার সাত্তার
তিনি আরো লিখেছেন, ‘৩১শে জানুয়ারি আমার শুভ জন্মদিন৷ যে দিনটা আর মাত্র কয়েকটা দিনের পরই আসতে চলেছে৷ এই উপলক্ষ্যে আপনাদের ভক্ত-পাঠক আমার পরম শ্রদ্ধেয়ও নানাজি ইসমাইল মালিত্যার (বয়স ৭২ বছর) স্বকণ্ঠে গাওয়া দুটি গানের অডিও আপনাদের কাছে পাঠালাম৷ প্রচার করলে খুবই খুশি হবো৷
- ধন্যবাদ দু'জনকেই লেখার জন্য৷ আর বন্ধু বুলবুলকে বলছি, আপনার পাঠানো গান দুটো আমরা পেয়েছি এবং শুনেছি৷ খুব ভালো লেগেছে৷ আপনি তো জানেন রেডিওতে বাংলা অনুষ্ঠান প্রচার বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় বছর খানেক আগে৷ তাই গান দুটি আর অন্য বন্ধুদের বাজিয়ে শোনানো সম্ভব হলো না৷ এর জন্য আমরা দুঃখিত৷ তবে আমাদের ভালো লাগার কথা আপনার নানাকে জানাবেন কিন্তু!
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ