1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গণমিছিলে বড় শোডাউনের প্রস্তুতি বিএনপির

২৯ ডিসেম্বর ২০২২

গণমিছিলের যুগপৎ কর্মসূচিতে লাখো মানুষের সমাগম ঘটিয়ে বড় শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি।

https://p.dw.com/p/4LXUU
বিএনপির গত ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ
বিএনপির গত ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশছবি: Mortaza Rashed/DW

শুক্রবার বিকালে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এ মিছিল শুরু হবে। যুগপৎ কর্মসূচির কৌশল হিসেবে সমমনা জোট ও দলগুলোও মিছিল করবে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে।  

‘গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা'য় ঘোষিত ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে গণমিছিলের কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। এছাড়াও, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাতে "ভোট ডাকাতি” অভিযোগ করে দিনটিকে বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস' হিসেবে পালন করে।

বিএনপির ঘোষিত শুক্রবারের এ কর্মসূচিতে তিনটি জোট ও পৃথকভাবে আরও তিনটি দল মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৩৩টি দল সমর্থন জানিয়েছে। একই দিন তারাও পৃথকভাবে এ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে গণতন্ত্র মঞ্চের সাতটি দল, ১২ দলীয় জোটের বারোটি দল, ১১ দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের ১১ দল এবং জামায়াত, এলডিপি, গণফোরাম (মন্টু) রয়েছে। এর বাইরে আরও বেশ কয়েকটি দল নিজেদের মতো করে ওই কর্মসূচি পালন করবে বলে জানা গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া দলগুলোর সঙ্গে কর্মসূচি সমন্বয়ের জন্য গঠিত লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর দিনের ভোট রাতে হয়েছে। এই দিনটিকে তারা "ভোট ডাকাতি” দিবস হিসেবে পালন করে আসছেন। এবার একদিকে সরকার পতনের আন্দোলনে ১০ দফা দাবি আদায়ে কর্মসূচি পালন করবেন, অন্যদিকে ভোট ডাকাতির দিবসও পালন করছেন। গণমিছিলের মাধ্যমে এটি করা হচ্ছে। 

আয়োজক নেতাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন জানান, তাদের শান্তিপূর্ণ এই মিছিলে কয়েক লাখ লোকের সমাগম ঘটবে।

গত জুলাই থেকে তাদের রাজপথের কর্মসূচি ধারাবাহিকভাবে সফল হওয়ায় তৃণমূল নেতাকর্মীরা এখন বেশ উজ্জীবিত। সারাদেশে মামলার পাহাড়, ধরপাকড়, হামলার পরও যে কোনো কর্মসূচিতে তারা অংশ নিচ্ছেন। তাদের এ মনোবল ধরে রাখতে সব ধরনের চেষ্টা, কৌশল ও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। একটি কর্মসূচি থেকে আরেকটি কর্মসূচির সংযোগ স্থাপন করা হচ্ছে। যাতে নেতাকর্মীরা রাজনীতিতে ব্যস্ত সময় পার করতে পারেন। 

ঢাকায় লোক সমাগমের জন্য এরই মধ্যে ঢাকা মহানগরের প্রত্যেক থানা, ওয়ার্ড এমনকি ইউনিট পর্যায়ের নেতাকর্মীর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দলের প্রত্যেক অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরাও নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর বাইরে ঢাকার আশপাশের এলাকা থেকেও অনেক নেতাকর্মী আসবেন বলে আয়োজক নেতাদের অনেকে জানিয়েছেন। 

জোট ও দলের সঙ্গে বৈঠক 

যুগপৎ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সমমনা জোট ও দলের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছে লিয়াজোঁ কমিটি। গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনকে এগিয়ে নেওয়ার কৌশলসহ আগামীতে কী ধরনের কর্মসূচি আসতে পারে, সেসব নিয়ে বিশ্নেষণ করেন তারা। বিভিন্ন জোট ও দলের নেতাদের মতামত গ্রহণ করেছেন বিএনপি নেতারা। তবে, এখন পর্যন্ত নতুন কর্মসূচির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। দল ও জোটের সঙ্গে আজ আবার বৈঠক আছে বিএনপির। 

দলটির নীতিনির্ধারক নেতাদের মতে, ঢাকাসহ ১০ বিভাগীয় গণসমাবেশে নেতাকর্মীর মধ্যে আন্দোলনের ব্যাপারে যে উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছে, সেটি ধরে রাখার জন্য ধারাবাহিক কর্মসূচি অব্যাহত রাখা হবে। এ ব্যাপারে সমমনা দল ও জোটের নেতাদের কাছ থেকে মতামত নেওয়া হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় '১২ দলীয় জোট' ও 'জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট' নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন বিএনপির লিয়াজোঁ (সমন্বয়) কমিটির নেতারা। বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে এবং বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এলডিপির সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি নেতারা। এসব বৈঠকে 'রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, অত্যাচার ও নির্যাতন' এর বিরুদ্ধে যুগপৎ কর্মসূচি দেওয়ার মতামত ওঠে এসেছে।

যেসব স্থানে গণমিছিলের হবে

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে কাকরাইল মোড়, শান্তিনগর-মালিবাগ-মৌচাক-মগবাজার হয়ে বাংলামটর পর্যন্ত গণমিছিল করবে বিএনপি। এ গণমিছিল হবে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। 

একই দাবিতে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় গণমিছিল করবে জামায়াত। কর্নেল অলির এলডিপি কারওয়ান বাজার রেলগেট এলাকা থেকে মগবাজার ও মালিবাগ এলাকায় গণমিছিল করবে। গণতন্ত্র মঞ্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবে সমাবেশ শেষে জিপিও হয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে দিয়ে আবারও পল্টন মোড়ে এসে মিছিল শেষ করবে। 

পল্টনের বিজয়নগর পানি ট্যাঙ্কের সামনে থেকে কাকরাইল এলাকায় মিছিল করবেন ১২ দলীয় জোটের নেতারা। ১১ দলীয় জোটের নেতারা একই স্থান থেকে মিছিল শুরু করে শান্তিনগর-মালিবাগ-মৌচাক-মগবাজার হয়ে বাংলামটর গিয়ে শেষ করবে। 

সতর্ক পাহারায় থাকবে আওয়ামী লীগ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঢাকায় বিএনপির গণমিছিলকে কেন্দ্র করে ১০ ডিসেম্বরের মতোই সতর্ক পাহারায় থাকবে আওয়ামী লীগ। ঢাকাসহ সারা দেশেই এই সতর্ক পাহারা বসানো হবে।

আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এই কথা বলেন। তিনি বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস করবে, ভাঙচুর করবে, সেখানে কি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে থাকব, ললিপপ খাব?

একেএ/কেএম (সমকাল, প্রথম আলো)