1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চরম দক্ষিণপন্থিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিপাকে ম্যার্কেলের দল

১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

জার্মানির প্রধান বিরোধী দল সিডিইউ আঞ্চলিক পার্লামেন্টে চরমপন্থি এএফডি দলের সমর্থন নিয়ে একটি প্রস্তাব পাশ করে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে৷ জার্মানির রাজনৈতিক জগতে প্রবল বিতর্ক শুরু হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/4WMuh
সিডিইউ আঞ্চলিক পার্লামেন্টে চরমপন্থি এএফডি দলের সমর্থন নিয়ে একটি প্রস্তাব পাশ করে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে
সিডিইউ আঞ্চলিক পার্লামেন্টে চরমপন্থি এএফডি দলের সমর্থন নিয়ে একটি প্রস্তাব পাশ করে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেছবি: Martin Schutt/dpa/picture alliance

গোটা ইউরোপ জুড়ে চরম দক্ষিণপন্থি শক্তির বাড়বাড়ন্তের মাঝে মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলি যতটা সম্ভব ভোটারদের ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করছে৷ কিন্তু একের পর এক নির্বাচন ও জনমত সমীক্ষায় চরমপন্থিদের প্রতি মানুষের সমর্থন বেড়েই চলেছে৷ এমন শক্তিকে ক্ষমতাকেন্দ্র থেকে দূরে রাখতে নিজস্ব প্রতিদ্বন্দ্বিতা ভুলে মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলি প্রায়ই একজোট হচ্ছে৷ জার্মানির চরম দক্ষিণপন্থি এএফডি দলকেও এতকাল সেভাবে একঘরে রাখা হয়েছে৷ বাকি দলগুলি এএফডি-র সঙ্গে জোট সরকার গড়ার সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছে৷ বিরোধী পক্ষে থেকেও সেই দলের সঙ্গে সহযোগিতার প্রস্তাব বার বার উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷ জার্মানির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা সেই দলের কয়েকজন নেতার কার্যকলাপের উপর নজর রাখায় এতকাল সব দল আরো সতর্ক ছিল৷ কিন্তু এবার সেই প্রত্যয়ে চিড় ধরায় দুশ্চিন্তা বাড়ছে৷

আপাতদৃষ্টিতে গুরুত্বহীন হলেও জার্মানির প্রধান বিরোধী ইউনিয়ন শিবিরের স্থানীয় শাখার এক সিদ্ধান্ত গোটা দেশে নজর কেড়েছে৷ পূবের টুরিঙ্গিয়া রাজ্যের পার্লামেন্টে বিরোধী দল হিসেবে সিডিইউ জনসাধারণ ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলির সম্পত্তির করের বোঝা কমাতে এক উদ্যোগ নিয়েছিল৷ শুধু উদারপন্থি এফডিপি দলের ভোট সেই উদ্যোগের জন্য যথেষ্ট হতো না৷ বৃহস্পতিবার এএফডি দলের সমর্থন নিয়ে সেই প্রস্তাব অনুমোদন করা সম্ভব হয়েছে৷

এমন ঘটনার পর জার্মানির রাজনৈতিক জগতে আলোড়ন পড়ে গেছে৷ চরম দক্ষিণপন্থি শক্তির সঙ্গে যে কোনো বোঝাপড়ার পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে দিচ্ছেন অনেক রাজনৈতিক নেতা ও বিশেষজ্ঞ৷ জনমত সমীক্ষায় বর্তমানে সিডিইউ-র পরেই এএফডি জনসমর্থন পাচ্ছে৷ আগামী বছর একাধিক রাজ্য নির্বাচনে সেই দল এমনকি সরকার সবচেয়ে বেশি সমর্থন পেয়ে এমনকি গড়ার উদ্যোগ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ সমালোচকদের মতে, এমন অবস্থায় সিডিইউ-র মতো ‘দায়িত্বশীল' দল নরম মনোভাব নিলে এএফডি জোট সরকার গড়ার সুযোগ পেতে পারে৷ বিদেশি ও ইউরোপ-বিদ্বেষী এই শক্তি একবার ক্ষমতায় এলে জার্মানির রাজনৈতিক জগতে বিপর্যয়েরও আশঙ্কা দেখছেন অনেকে৷

জাতীয় পর্যায়ে সাবেক চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সিডিইউ দল এএফডি-র সঙ্গে কোনো রকম সহযোগিতার সম্ভাবনা বার বার উড়িয়ে দিয়ে এসেছে৷ কিন্তু রাজ্য ও পৌর স্তরে অনেক নেতা এমন ছুতমার্গের বিরোধী৷ টুরিঙ্গিয়া রাজ্যের সিডিইউ প্রধান মারিও ফোগ্ট আঞ্চলিক শাখার সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, বাস্তবে এই ভোটের ফলে বরং তাঁর দল এএফডি ভোটারদের সমর্থন ফিরে পাবে৷ তাঁর মতে, সাধারণ মানুষ রাজনৈতিক কলাকৌশল দেখে বিরক্ত হয়ে পড়েছেন৷ তাঁরা চান, তাঁদের দুশ্চিন্তার কারণ দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হোক৷ ভোগ্টের মতে, এমন সব বিষয়কে মূলধন করে মানুষের সমর্থন আদায় করা সম্ভব৷ তিনি অবশ্য আবার জোর দিয়ে বলেন, তাঁর সিডিইউ দল এএফডি-র সঙ্গে কাজ করে না৷

সিডিইউ দলের প্রধান ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎসও আঞ্চলিক শাখার সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, তাঁর দল ফেডারেল বা রাজ্য স্তরে অন্য দলের কাজ দেখে রাজনীতি করে না৷ বৃহস্পতিবারের ভোটাভুটি সত্ত্বেও ম্যার্ৎস এএফডির সঙ্গে সহযোগিতার সম্ভাবনা আবার উড়িয়ে দিয়েছেন৷

সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি ও পরিবেশবাদী সবুজ দল সিডিইউ দলের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করে এই পদক্ষেপকে ‘শয়তানের সঙ্গে বোঝাপড়া' হিসেবে বর্ণনা করেছে৷ বামপন্থি দল ডি লিংকে সিডিইউ-র সমালোচনা করে বলেছে, এএফডি-র সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে তোলার পথে এগোচ্ছে এই দল৷

জার্মানিতে চরম ডানপন্থা ও তিনটি প্রশ্ন

এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)