1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফিলিস্তিনি নেতা ইসমাইল হানিয়ে এর পরিচিতি

আবদুস সাত্তার২২ ফেব্রুয়ারি ২০০৬

প্যালেস্টাইনের প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন হামাসের বাস্তববাদী নেতা ইসমাইল হানিয়ে৷ প্যালেস্টাইনের সাধারণ নির্বাচনে উগ্রপন্থী ইসলামি গোষ্ঠী হামাস এর বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় জয়লাভের ফলেই হানিয়ে প্যালেস্টাইনের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/DPrp
ছবি: AP

প্যালেস্টাইনের ভাবী প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল হানিয়ে হলেন বাস্তববাদী - যিনি আপোষে প্রস্তত - অন্তত তাঁর ফিলিস্তিনি প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে৷ কোন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় তিনি দেখাতে পারেন অসাধারণ চাতুরী৷ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিরল গুণও রয়েছে তাঁর মধ্যে৷ সত্যি বলতে কি, ইসমাইল হানিয়ে ক্রিশমার অধিকারী ৷ প্যালেস্টাইনের ভবিষ্যত নির্ধারণে ভাবী নেতার মাঝে এসব গুণ থাকা অত্যন্ত জরুরি৷

প্যালেস্টাইনের ভাবী সরকার প্রধান ইসমাইল হানিয়ে সম্পর্কে অবশ্য তেমন কিছু জানা যায় নি- যেমন তাঁর সত্যিকারের বয়স ৷ তবে মনে হয় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশের কোঠায়৷ যা নিশ্চিত তাহল ইসমাইল হানিয়ে এর জন্ম গাজা ভূ-খন্ডের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত শাতি শরণার্থী শিবিরে৷ তাঁর পরিবার ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় আসকালন বর্তমানে যার নাম আসকেলন থেকে গাজায় পালিয়ে যায়৷ অধিকাংশ শরণার্থীর মত তাঁরাও আশ্রয় নেন এমন একটি শরণার্থী শিবিরে - যা বহু বছর ধরে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত মিশরের প্রশাসনাধীন ছিল পরে দুই হাজার পাঁচ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলী দখলদারীর অধীনে৷

ইসমাইল হানিয়ে ছিলেন গাজায় ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিকের ছাত্র এবং ১৯৮৭ সালে তিনি সেখান থেকে আরবী সাহিত্যে ডিগ্রি লাভ করেন৷ ছাত্র জীবনেই তিনি ছাত্রদের মাঝে সক্রিয় ছিলেন৷ প্রথম প্যালেস্টাইনী বিপ্লব Intifada যখন শুরু হয় তখনই তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা শেষ হয়৷ আর ঠিক ঐ সময়েই প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন - হামাস গোষ্ঠী এবং তিনি তাতে যোগ দেন৷ হানিয়ে ফিলিস্তিনি বিপ্লবেও অংশ নেন৷

Intifada শুরু হওয়ার পরে পরেই ইসমাইল হানিয়েকে ইসরায়েল গ্রেফতার করে তবে কিছুদিন পরেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়৷ পরে আবারো তাঁকে গ্রেফতার করা হয় ৷ জেলে রাখা হয় কয়েক মাস৷ ১৯৮৯ সালে তিনি আবার নতুন করে গ্রেফতার হন এবার তাঁকে তিন বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়৷

তিন বছর কারাভোগের পর আনুমানিক আরো চারশো হামাস কর্মী ও সমর্থক সহ ইসমাইল হামিয়েকে দক্ষিণ লেবাননে পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷ সেখানে তাঁর যোগাযোগ হয় সিরিয়া এবং ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সঙ্গে৷

এক বছরেরও বেশি সময় পর ইসারায়েল তাদের ফেরত আনে৷ হানিয়ে গাজায় প্রত্যাবর্তন করেন এবং সেখানে ১৯৯৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীন নিযুক্ত হন৷ বর্তমানে হামাস গোষ্ঠীর বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক প্রধান খালেদ মাশাল এর ওপর ব্যর্থ হত্যা প্রচেষ্টার পর ১৯৯৭ সালে তখন আট বছর ধরে কারাবন্দী হামাস নেতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনকে ইসরায়েল মুক্তি দিতে বাধ্য হয় এবং বিজয়ীর বেশে গাজা ফিরে আসার পর ইয়াসিন হানিয়েকে তাঁর একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ করেন৷ এর ফলে যেমনি তাঁর মর্যাদা বৃদ্ধি পায় তেমনি বিপদও৷ দুই হাজার তিন সালের সেপ্টেম্বরে ইসরায়েলী হেলিকপ্টার একটি বাড়িতে বোমা ফেলে যেখানে ইয়াসিন ও হানিয়ে সামান্য আহত হয়ে বেঁচে যান৷ এর ছয় মাস পর ইসরায়েল ইয়াসিনকে হত্যা করে এবং তার কয়েক মাস পর তাঁর উত্তরসুরী রান্টিসিকে৷ হানিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যান৷

ইসমাইল হানিয়ে নিজেকে পরিচিত করে তোলেন একজন মধ্যপন্থী ও বাস্তববাদী হিসেবে৷ তাই তিনি ১৯৯৬ সালেই হামাসের নির্বাচনে অংশ গ্রহণের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ৷ সম্প্রতি যা সফল হয়৷ জানুয়ীর সাধারণ নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় হামাসের বিজয় তাঁকেও অবাক করে৷ নির্বাচনের শীর্ষ প্রার্থী প্রচেষ্টা করেছিলেন হামাসের ক্ষমতায় যাওয়ার কিন্তু নিজে নন৷ কিন্তু এখন ইসমাইল হানিয়েই হচ্ছেন প্যালেস্টাইনের প্রধানমন্ত্রী৷