1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাষ্ট্রহীন শামীমার ভবিষ্যৎ কী?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বৃটিশ নাগরিকত্ব বাতিল হওয়া আইএস পত্নী শামীমা বেগম আইন অনুযায়ী চাইলে বাংলাদেশি নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন৷ তবে তাকে নাগরিকত্ব দেয়া না দেয়া বাংলাদেশের এখতিয়ার৷

https://p.dw.com/p/3XUdI
ছবি: Reuters/L. Lean

নাগরিকত্ব মামলায় হেরে এখন রাষ্ট্রহীন শামীমা৷ জন্মসূত্রে তার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দাবির সুযোগ আছে বলে জানান বিশ্লেষকরা৷ তবে ব্রিটিশ আদালতের রায়কেও ত্রুটিপূর্ণ বলে মনে করেন তারা৷

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগম পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন একাডেমির ছাত্রী ছিলেন৷ ২০১৫ সালে দুই বান্ধবীকে নিয়ে তিনি যুক্তরাজ্য থেকে সিরিয়া যান৷ সেখানে ডাচ বংশোদ্ভূত আইএস জঙ্গি ইয়াগো রিদাইককে বিয়ে করেন৷  এক বৃটিশ সাংবাদিক গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে শামীমার সাথে কথা বলেন৷ সাক্ষাৎকারে তিনি যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার আগ্রহের কথা জানান৷ কিছুদিন পর তার একটি ছেলে সন্তান হলেও, পরে শিশুটি মারা যায়৷

সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে গত বছরই যুক্তরাজ্য সরকার শামীমার নাগরিকত্ব বাতিল করে৷ পরে তার আইনজীবী এই আদেশ চ্যালেঞ্জ করেন৷ কিন্তু মামলায় হেরে গেছেন শামীমা৷ শুক্রবার নাগরিকত্ব বাতিল বহাল রেখেছে ব্রিটিশ আদালত৷

মিতি সানজানা

দেশটির আইনে সন্ত্রাসে জড়িত থাকার অভিযোগে কোনো নাগরিকের নাগরিকত্ব বাতিল করার বিধান রয়েছে৷ তবে একই আইন অনুযায়ী কাউকে রাষ্ট্রহীনও করা যায় না৷ ব্যারিস্টার মিতি সানজানা ডয়চে ভেলেকে এই তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘‘যুক্তরাজ্যের আদালতের রায়ে ত্রুটি আছে৷ তারা বলেছেন, শামীমার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিলে তিনি রাষ্ট্রহীন হয়ে যাননি৷ বংশগতভাবে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক৷ এটা আসলে একটা ভুল তথ্য৷ সে কোনোভাবেই বাংলাদেশর নাগরিক নয়৷ সে এখন রাষ্ট্রহীন৷’’

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব  অর্জন করতে হলে তাকে বাংলাদেশে জন্ম নিতে হয়৷ সে বাংলাদেশে জন্ম নেয়নি৷ বাংলাদেশে কখনো আসেনওনি৷ এমনকি কোনো আবেদন করে অতীতে নাগরিকত্ব গ্রহণও করেননি৷ তিনি ব্রিটিশ নাগরিক এবং ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবেই সিরিয়ায় গিয়েছেন৷ অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব তার নাই৷ তাই যুক্তরাষ্ট্রের আদালত তার নাগরিকত্ব বাতিল করায় সে এখন রাষ্ট্রহীন৷ রাষ্ট্রহীন করা ব্রিটিশ আইনের লংঘন৷’’

অন্যদিকে শামীমা বাংলাদেশের নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারেন বলে  মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ৷ কিন্তু নাগরিকত্ব দেয়া না দেয়া বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব এখতিয়ার৷ তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে দ্বৈত নাগরিকত্বের বিশেষ বিধান আছে৷ সেটার জন্য আবেদন করতে হয়৷ আর সেই আবেদন বিবেচনা করার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই৷ সেটা সরকারের এখতিয়ার৷’’

মনজিল মোরসেদ

তবে ব্রিটিশ গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশ্বাস করে শামীমা বেগম চাইলে বাংলাদেশে চলে যেতে পারেন, কেননা তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত৷ ব্রিটেনের নাগরিকত্বের পাশাপাশি তার বাংলাদেশি নাগরিকত্ব রয়েছে বলে স্কাই নিউজ এক সরকারি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে৷ তবে, বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নিজের কোনো বাংলাদেশি পাসপোর্ট না থাকার কথা এবং অতীতে কখনো বাংলাদেশে না যাওয়ার কথা জানিয়েছেন শামীমা৷

ব্রিটিশ সরকার ও দেশটির গণমাধ্যম শামীমাকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে অভিহিত করায় শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘শামীমার ব্যাপারে বাংলাদেশের কিছু করার নেই৷ কারণ সে বাংলাদেশের নাগরিক নয়, ব্রিটিশ নাগরিক৷ তার জন্মও বাংলাদেশে হয়নি৷ সে এখানে কখনো আসেওনি৷''

শামীমা এখন সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের ‘রজ' নামের একটি শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করছেন৷ এদিকে গোয়েন্দা সূত্র জানা গেছে, সরাসরি বাংলাদেশ থেকে সিরিয়া গিয়ে যাারা আইএস-এ যোগ দিয়েছেন তাদের সংখ্যা ৩০-৩৫ জন হবে৷ এর বাইরে একটি অংশ বাংলাদেশের বাইরে থেকে গেছে৷

জাতিসংঘের হিসাবে সিরিয়া ও ইরাকে আইএস-এর হয়ে যুদ্ধ করতে ১১০টি দেশ থেকে ৪০ হাজারেরও বেশি-বিদেশি বিভিন্ন দেশ থেকে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন৷ এরমধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে ৮০০, মালয়েশিয়া থেকে ১৫৪, ফিলিপাইন থেকে ১০০ এবং বাংলাদেশ থেকে গিয়েছে ৪০ জন৷ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান