সুদানে মানবিক সংকট
সুদানে একবছর ধরে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে একটি আধা-সামরিক বাহিনীর যুদ্ধ চলছে৷ এতে মারাত্মক সংকটে পড়েছে সেদেশের মানুষ৷
দ্বন্দ্ব
২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশির এবং ২০২১ সালে বেসামরিক সরকার উৎখাতে একসঙ্গে কাজ করা দুটি সামরিক বাহিনী গত একবছর ধরে নিজেদের মধ্যে সংঘাতে লিপ্ত আছে৷ এর মধ্যে একটি জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের নেতৃত্বাধীন বাহিনী, যেটিকে মূলত দেশটির মূল সামরিক বাহিনী হিসেবে ধরা হয়৷ অন্যটি মোহামেদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বাধীন আধা-সামরিক বাহিনী ‘ব়্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস’ আরএসএফ৷
খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা
সুদানের জনসংখ্যা প্রায় পাঁচ কোটি৷ এর মধ্যে প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ মানুষ মারাত্মক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে জানিয়েছে ক্ষুধা পর্যবেক্ষণ করা সংস্থা আইপিসি৷ এর মধ্যে প্রায় ৪৯ লাখ মানুষ জরুরি স্তরের ক্ষুধায় ভুগছেন৷ এই স্তরটি দুর্ভিক্ষের চেয়ে এক স্তর নীচে৷
সবচেয়ে অসহায় যারা
নারী ও মেয়েরা সবচেয়ে অসহায় অবস্থায় আছে, কারণ তারা সাধারণত পরিবারের সবার খাওয়ার পর খান৷ ফলে তারা আরও কম খাবার পান৷
গৃহহীনের সংখ্যা
এক বছর আগে সংঘাত শুরু হওয়ার পর ৮৬ লাখের বেশি মানুষকে তাদের ঘর ছেড়ে পালাতে হয়েছে৷ দারফুরসহ অন্যান্য সংকটের কারণে আরও প্রায় ৩০ লাখ মানুষ গৃহহীন অবস্থায় আছে৷
প্রতিবেশী দেশে আশ্রয়
নিরাপদ থাকতে ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে ২০ লাখের বেশি মানুষ প্রতিবেশী দেশ মিশর, চাড ও দক্ষিণ সুদানে পালিয়ে গেছেন৷ অল্প কিছু মানুষ ইথিওপিয়া ও সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকেও চলে গেছেন৷
সংকটে স্বাস্থ্যসেবা
এক কোটি ১০ লাখের বেশি মানুষের জরুরি স্বাস্থ্য সহায়তা প্রয়োজন৷ কিন্তু সংঘাতপূর্ণ এলাকার ৭০ শতাংশের বেশি স্বাস্থ্য অবকাঠামো বন্ধ বা আংশিক খোলা আছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে৷
ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা ব্যবস্থা
যুদ্ধের কারণে প্রায় দুই কোটি শিশুর শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে৷ সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, প্রায় এক কোটি শিশু গত একবছরে যুদ্ধ হচ্ছে এমন এলাকায় বাস করেছে৷
সহায়তা ও প্রাপ্তি
চলতি বছর সুদানের জন্য ২.৭ বিলিয়ন ডলার সহায়তা চেয়েছে ত্রাণ সংস্থাগুলো৷ এখন পর্যন্ত ছয় শতাংশের কম সহায়তা পাওয়া গেছে৷ এদিকে, প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে যাওয়া সুদানিদের জন্য ১.৪ বিলিয়ন ডলার চেয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা৷