1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আমাদের বুদ্ধিজীবীরা এমন কেন?

সাংবাদিক
মাসুদ কামাল
২৩ ডিসেম্বর ২০২২

ছোটবেলায় আমাদের একটা খেলার মতো বিষয় ছিল৷ সমবয়সিরা মিলে খেলতাম৷ বাজার থেকে যে ঠোঙায় করে জিনিসপত্র বাসায় আসতো, সেই ঠোঙাগুলো খুব সাবধানে খুলতাম৷

https://p.dw.com/p/4LNIm
Symbolbild Lesen
‘‘আমাদের দেশে ‘বুদ্ধিজীবী’ শব্দটি একসময় খুবই শ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারিত হতো’’ছবি: picture-alliance/dpa/P. Endig

বেশির ভাগ ঠোঙাই তৈরি করা হতো পুরানো বইয়ের পাতা দিয়ে৷ আমরা ঠোঙার পাতাগুলো খুলে লেখাগুলো পড়তাম, তারপর বলার চেষ্টা করতাম সেটা কোন বিষয়ক বই, কোন ক্লাসের, কোন অধ্যায়ের৷ অনেকটা যেন প্রতিযোগিতার মতো৷

অভ্যাসটা আমার অনেকদিন ছিল৷ যখন রিপোর্টিং করতাম, তখন পত্রিকায় ছাপা কোনো বিবৃতি উপরে নীচে ঢেকে মাঝখান থেকে পড়ে বলার চেষ্টা করতাম—কোন সংগঠনের বিবৃতি হতে পারে৷ প্রায় সময়ই সফল হতাম৷ কিন্তু যতই দিন যেতে থাকলো, এই খেলাটা কঠিন হতে থাকলো৷ শিক্ষকদের সংগঠন, ছাত্রদের সংগঠন, শ্রমিকদের সংগঠন, সাংবাদিকদের সংগঠন, আলেমদের সংগঠন—সব যেন কেমন মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল৷ বিবৃতি পড়ে এখন আর সংগঠনটিকে চেনা যায় না৷ তবে সংগঠনটি কোন পন্থি, সরকার নাকি বিরোধী—সেটা বোঝা যায় সহজেই৷

একটা উদাহরণ দিই৷ একটা বিবৃতির মাঝখান থেকে কিছু অংশ এখানে তুলে দিচ্ছি৷

‘‘বুধবার মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস যেভাবে মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে একটি বিশেষ রাজনৈতিক পক্ষের স্বার্থসিদ্ধির সহায়ক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন, তা উদ্বেগজনক৷ সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বিএনপি সমর্থিত ‘মায়ের ডাক' নামের একটি সংগঠনের আহ্বানে ২০১৩ সালে একজন বিশেষ ব্যক্তির নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ শুনতে ঢাকা শহরের একটি বাড়িতে উপস্থিত হন৷ একই সময়ে খবর পেয়ে ‘মায়ের কান্না' নামের সংগঠনের কর্মীরা তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি তাকে অবহিত করার জন্য একটি স্মারকলিপি দেওয়ার চেষ্টা করেন৷ এ বিষয়ে তিনি কোনো কর্ণপাত করেননি৷ মায়ের কান্না সংগঠনটি সামরিক স্বৈরাচার জেনারেল জিয়ার সময়ে (১৯৭৭-৭৮ সালে) বিচারের নামে হত্যা ও গুমের যে ঘটনা ঘটেছিল, তাতে স্বজনহারাদের মানবাধিকার রক্ষার আবেদন নিয়ে রাষ্ট্রদূতের শরণাপন্ন হয়েছিল৷ তাদের কথা শুনতে অপারগতা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দ্বৈত আচরণের বহিঃপ্রকাশ, যা দুঃখজনক৷’’

আমি নিশ্চিত এতটুকু পড়ে কেউ কি বলতে পারবেন—  এটা কোন সংগঠনের বিবৃতি? অনেকের কাছে হয়ত এটাকে কোনো রাজনৈতিক দলের বিবৃতি বলে মনে হতে পারে৷ তাদেরকে বরং সাহায্য করা যাক৷ না, এটা কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের বিবৃতি নয়৷  আচ্ছা, বিবৃতির আরও একটু অংশ বরং পড়া যাক৷ ‘‘সম্প্রতি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে কয়েকটি দেশের কূটনীতিকেরা যেভাবে বক্তব্য দিয়েছেন ও অংশগ্রহণ করছেন, তা দৃষ্টিকটু ও কূটনৈতিক শিষ্টাচারের লঙ্ঘন৷ পরিতাপের বিষয় হচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো (যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও যুক্তরাজ্য) আমাদের বিভিন্ন সময়ে মানবাধিকারের কথা বললেও তারাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের স্বঘোষিত খুনি ও একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে৷’’

এখন কি বোঝা যাচ্ছে? না, এখনো বলা সম্ভব নয়৷ এতটুকু পড়েও কেউ বলতে পারবেন না এটা কোন ধরনের সংগঠনের বিবৃতি৷ ছাত্র সংগঠন হতে পারে, শিক্ষক সংগঠন হতে পারে, ডাক্তারদের সংগঠন হতে পারে, সাংবাদিক সংগঠন হতে পারে, সুশীল সমাজ হতে পারে, শ্রমিক সংগঠন হতে পারে, আবার মাদ্রাসা শিক্ষকদের সংগঠনও হতে পারে৷  তবে এতটুকু অতি সহজেই বলা যাবে যে—  এটা আওয়ামী ঘরানার কোনো সংগঠন হবে৷ পাঠকদের বরং বলেই দিই, এই বিবৃতিটি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি!

আমার ধারণা এতটুকু তথ্যপ্রাপ্তির পরও প্রশ্ন করার সুযোগ থেকে যায়৷ কেউ বলতেই পারেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের একটা কাজ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির এত মাথা ব্যাথা কেন? বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা আমাদের দেশে যখন অবস্থান করেন, একটা নীতিমালার মধ্যেই থাকেন৷ সেই নীতিমালার বাইরে কেউ গেলে, সেটা যদি আমাদের জন্য অস্বস্তিকর অথবা বিব্রতকর হয়, আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আছে, তারা সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে৷ সেই সব ব্যবস্থারও কতগুলো বিধিবদ্ধ ধাপ রয়েছে৷ তাদেরকে মন্ত্রণালয় ডেকে পাঠাতে পারে, নিজেদের অস্বস্তির কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে পারে, এমনকি প্রয়োজন বোধ করলে দেশ থেকে বেরও করে দিতে পারে৷ এরকম উদাহরণ বিভিন্ন দেশে প্রায়ই দেখা যায়৷ আমাদের দেশেও দেখা গেছে৷ এতসব নিয়ম-কানুন থাকা সত্ত্বেও, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কেন এরকম একটা বিবৃতি দেওয়ার দরকার পড়লো? তাদের কি আর কোনো কাজ নেই? কেবল শিক্ষকদের কথাই বা কেন বলি, এই মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বিষয়ে বিবৃতির শুরুটা তো আসলে করেছেন কতিপয় বিশিষ্ট নাগরিক৷ প্রায় একই রকম বিবৃতি৷ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস সেদিন ‘মায়ের কান্না' নামক সংগঠনের স্মারকলিপি না নিয়ে একটা অন্যায় করেছেন- এমন বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে তাদের বিবৃতিতেও৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিবৃতির পর দেখা গেল জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও গা ভাসালেন একই গড্ডালিকা প্রবাহে৷ তাদের বিবৃতির ভাষা ও ভাব একই রকম৷

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এইসব বিবৃতি কি জনমনে প্রকৃতপক্ষে কোনো প্রভাব বিস্তার করে? আমার মনে হয় করে না৷ বিবৃতিতে তারা কী বললেন আর কী না বললেন, এ নিয়ে সাধারণ মানুষের কোনোই মাথাব্যথা নেই৷ কারণ তারা ভালো করেই জানেন, এইসব তথাকথিত ‘প্রখ্যাত' ব্যক্তি আসলে কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের মোসাহেবী করার জন্যই এই বিবৃতি দিয়েছেন৷ তাদের মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা কাজ করে, কার আগে কে বিবৃতি দিতে পারে—সেই প্রতিযোগিতা৷ এই যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আগেই ৩৪ বিশিষ্ট নাগরিক বিবৃতি দিয়ে দিলেন, এ নিয়ে হয়ত নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষকদের মধ্যে বেশ কিছুদিন একটা বেদনা কাজ করবে, আর বিপরীত দিকে ওই ৩৪ বিশিষ্ট নাগরিক অনুভব করবেন দারুণ আত্মশ্লাঘা৷ হয়ত মূল রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতার সঙ্গে দেখা হলে বলবেন, স্মরণ করিয়ে দেবেন যে, এই প্রসঙ্গে তারাই প্রথম বিবৃতি দিয়েছিলেন!

এই যে কথাগুলো বললাম, এগুলো কিন্তু নিছক কল্পনাপ্রসূত নয়৷ আমি নিজেই এমন বহু কথপোকথনের প্রত্যক্ষদর্শী৷ একবার তো এমনও হয়েছে, আমাকে সাক্ষীও মানা হয়েছে৷ একটা অনুষ্ঠানে এরকম একটি সংগঠনের নেতা বলছেন- অমুক প্রসঙ্গে আমরাই প্রথম সরকারের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছি৷ কী মাসুদ কামাল, আপনি তো বিষয়টা জানেন৷ আপনার পত্রিকাতেই তো প্রথম আমাদের বিবৃতিটা ছাপা হয়েছে!

তিনি তো বললেন, আমাকে সাক্ষীও মানলেন, কিন্তু আমি আসলে মনেই করতে পারছিলাম না৷ ঘটনাটির কথা মনে আছে, কিন্তু বিবৃতির কথা মনে নেই৷ আর কে আগে বিবৃতি দিয়েছিল—সেটা মনে রাখার তো কোনো প্রশ্নই ওঠে না৷ তাই আমি চুপ করে ছিলাম৷ তবে মনে হয়, আমার নামটি তিনি উচ্চারণ করেছিলেন কোনো সমর্থন পাওয়ার আশায় নয়, বরং নিজের বক্তব্যকে একটা শক্ত ভিত্তি দেওয়ার জন্যই৷ তার সেই প্রচেষ্টা বৃথা যায়নি৷ ওই ঘটনার কিছুদিনের মধ্যেই দেখলাম তার পেশার একটা গুরুত্বপূর্ণ পদে তার নিয়োগ হয়েছে! পেশাজীবী ওই ভদ্রলোক এখন এমপি হওয়ার প্রচেষ্টায় আছেন৷

আসলে এটাই মূল লক্ষ্য৷ বিবৃতিতে কি লেখা হলো, লেখাগুলো যৌক্তিক হলো কিনা—এসব নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই৷ এমনকি সাধারণ মানুষ তাদেরকে কতটা হালকাভাবে নিচ্ছে- সেটাও তাদের ভাবনায় নেই৷ তাদের চিন্তা একটাই, বিবৃতিদাতাদের নামের তালিকায় তার নামটি প্রথমদিকে থাকলো কি থাকলো না৷ অথবা তার আগে যাদের নাম লেখা হয়েছে দালালিতে তারা তার চেয়ে এগিয়ে কী না৷ বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলের জন্যই বিভিন্ন পেশায় এমন অনুগত মানুষ রয়েছেন৷ মূল রাজনৈতিক দলের ক্ষমতা ও জনপ্রিয়তার সঙ্গে তাল রেখে এদের সংখ্যায় বাড়ে বা কমে৷ এদের নাম দেখলেই সাধারণ মানুষ বলে দিতে পারে, এরা আসলে কার পক্ষে৷

আজকাল বিভিন্ন টেলিভিশনে বা সোশ্যাল মিডিয়াতে টকশো জাতীয় অনুষ্ঠান হয়৷ সেখানে নানা পেশার লোকজন যান, কথা বলেন৷ তবে কথা বলার জন্য মুখ খোলার আগেই দর্শক শ্রোতারা বুঝে যায়—কোন পক্ষে বলবে তারা৷ আসলে তারাও যেন এটাই চায়৷ নিজেদের গায়ে তারা একটা সিলমোহরই লাগাতে চায়৷ রাজনৈতিক দলকে যেন বলতে চায়—আমি তোমাদেরই লোক৷ সত্য বা মিথ্যা, যৌক্তিক বা অযৌক্তিক যে কথাই তোমরা বলো না কেন, আমি আছি সেটার পক্ষে বলার জন্য৷ এই লোকগুলো শিক্ষিত, ভারি ভারি সার্টিফিকেট আছে, কিন্তু মূর্খ রাজনীতিকের সামনেও যখন তারা দাঁড়ায়, সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না, আনুগত্য প্রকাশ করতে যেয়ে বিগলিত হয়ে পড়ে৷ রাজনীতিকরা যখন যুক্তিহীন গোঁয়াড়ের মতো কথা বলে, সেটাকেও সমর্থন করতে এইসব ডিগ্রিধারীদের মধ্যে নোংরা প্রতিযোগিতা দেখা যায়৷

মাসুদ কামাল, সাংবাদিক
মাসুদ কামাল, সাংবাদিকছবি: Hashibur Reza Kallol

আমাদের দেশে ‘বুদ্ধিজীবী’ শব্দটি একসময় খুবই শ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারিত হতো৷ শত প্রতিকূলতার মধ্যেও যারা নিজেদের চিন্তা ও আদর্শের সঙ্গে আপস না করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকতেন, তাদের জন্যই এই বিশেষণটি নির্ধারিত থাকত৷ আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের একেবারে শেষ পর্যায়ে অনেক বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়৷ অনেকে বলেন, এরা যুদ্ধে কেন যাননি? তাদের এমন প্রশ্নকে আমি অন্যায় মনে করি না৷ এত লোক যুদ্ধে যেতে পেরেছেন, ওনারা কেন যাননি? হয়তো তাদের কোনো সীমাবদ্ধতা ছিল, হয়তো কোনো দুর্বলতাও ছিল৷ ঠিক কী ছিল জানি না৷ কিন্তু তারপরও, এই লোকগুলো মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ না করা সত্ত্বেও তাদেরকে এভাবে ধরে ধরে হত্যা করা হয়েছিল কেন? হয়েছিল একারণে যে, শত প্রলোভন ও ভয় দেখানো সত্ত্বেও তাদেরকে সামরিক জান্তার পক্ষে আনা যায়নি৷ পাকিস্তানী শাসকদের পক্ষে তাদের দিয়ে একটা বিবৃতি দেওয়ানো যায়নি৷ বন্দুকের নলের মুখেও তারা তাদের বুদ্ধিবৃত্তি বা আদর্শের সঙ্গে আপস করেননি৷ সেই সময়ের প্রতিকূল অবস্থার সঙ্গে কি বর্তমান বা অন্য কোন সময়ের কিছুমাত্র তুলনা চলে? তাহলে এখন আমরা সেই রকম মেরুদণ্ড সোজা করে থাকা বুদ্ধিজীবী দেখতে পাই না কেন? সবাই কেন নতজানু হয়ে যাচ্ছেন ক্ষমতা ও লোভের কাছে? তাদের এই বুদ্ধিবৃত্তিক আত্মসমর্পনকে আপনি যেভাবেই সংজ্ঞায়িত করেন না কেন, তারা কিন্তু এতে বিন্দুমাত্র লজ্জা অনুভব করে না৷ তাদের কাছে প্রাপ্তিযোগটাই মূখ্য৷

আমার এক সাংবাদিক বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বিষয়ে সুশীল ও শিক্ষক সমাজের এমন ত্বরিত বিবৃতি প্রসঙ্গে৷ তিনি আমাকে তার পরিচিত প্রবীন এক অধ্যাপকের একটা কথা শুনিয়ে দিলেন৷ সেই অধ্যাপক ভদ্রলোক একবার বাজেট বিষয়ে মতামত দিতে যেয়ে বলেছিলেন, ‘এদেশে বাজেট সবচেয়ে ভালো বোঝে টোকাইরা৷ বাজেট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তারা রাস্তায় মিছিল করতে শুরু করে৷ কেউ বলে—এটা গরিব মারার বাজেট৷ আবার আর একদল টোকাই মিছিল করে বলে—গণমুখী বাজেট৷’

আমাদের ওইসব বুদ্ধিজীবী বা সুশীলদের হয়েছে ওই অবস্থা৷ রাজনৈতিক দলের নেতারা যা বলেন, কোরাসের ভঙ্গিতে সেটিকে নানাভাবে উচ্চারণের মধ্যেই থাকে তাদের মোক্ষলাভের সম্ভাবনা৷ টোকাইদের যেমন বাজেট বোঝার দরকার পড়ে না, মিছিলে থাকলেই অর্থপ্রাপ্তি নিশ্চিত হয়, এদেরও তেমনি—প্রাপ্তি সম্ভাবনাটাই হয়ে দাঁড়ায় মূল লক্ষ্য৷