1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মালয়েশিয়ায় ফেসবুকে রোহিঙ্গাবিরোধী প্রচার

১৪ অক্টোবর ২০২০

মালয়েশিয়ায় করোনার সংক্রমণ বাড়ার সাথে সাথে ফেসবুকে রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীদের বিরুদ্ধে ঘৃণা বক্তব্য এবং ভুল তথ্য ছড়ানোও বাড়ছে৷

https://p.dw.com/p/3jve1
Symbolfoto für Fake News
ছবি: imago images/ZUMA Wire

হেট স্পিচ বা ঘৃণা বক্তব্য ছড়ানোর জন্য মালয়েশিয়ায় নানারকম পাতা খোলা হয়েছে ফেসবুকে৷ যেমন: ‘অ্যান্টি রোহিঙ্গা ক্লাব', ‘ফরেনার্স মার মালয়েশিয়াস ইমেজ'৷ রয়টার্সে প্রতিবেদন প্রকাশের পর অবশ্য ফেসবুক এই পাতা দুটো সরিয়ে ফেলেছে৷ অথচ গত ৬ মাস ধরে এই পাতা দু'টি থেকে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছিলো৷

একটি ব্যক্তিগত গ্রুপ আছে, যাদের সদস্য সংখ্যা প্রায় এক লাখ৷ সেখানে এমন মন্তব্যও আছে যেখানে লেখা, ‘‘অভিশপ্ত শুয়োরের জ্ঞাতিগোষ্ঠীর সবাই মারা যাক৷''

২০১৮ সালে ফেসবুক জানিয়েছিল তাদের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের উপর সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে৷ গত বছর ৩৭০ কোটি ডলার এই প্ল্যাটফর্মের নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যয় করেছে ফেসবুক৷

রয়টার্স ফেসবুকে এ ধরনের অনেক পাতা ও গ্রুপ খুঁজে পেয়েছে, যেখানে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে৷ এমন একটি অ্যাকাউন্টের অ্যাডমিন মালয়েশিয়ার সাবেক এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা৷

এমন সব মন্তব্য এসব পেজ ও গ্রুপে আছে যা সহিংসতাকে উস্কে দেয়৷

এছাড়া কিছু ‘ক্লোজ গ্রুপ' আছে, যারা অন্যদের এসব গ্রুপে যোগ দেয়ার আহ্বান জানায়৷ রয়টার্সের প্রতিবেদনের পর এখন পর্যন্ত ৩৬টি পেজ ও গ্রুপের মধ্যে মাত্র ১২টি অপসারণ করেছে ফেসবুক৷

ফেসবুকের এক মুখপাত্র জানান, ‘‘আমরা কিছুতেই ঘৃণা বক্তব্য ছড়ানো, সহিংসতা, হুমকি সমর্থন করি না, তাই এর বিরুদ্ধে রিপোর্ট করলে, তা খতিয়ে দেখে আমরা সরিয়ে ফেলি৷''

কিছু কিছু পাতায় মন্তব্যে রোহিঙ্গাদের কুকুর এবং পরজীবীর সাথে তুলনা করা হয়েছে৷ কোথাও কোথাও প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে রোহিঙ্গাদের তাদের হাতে ছেড়ে দিতে যাতে তারা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে৷

মুসলিম অধ্যুষিত মালয়েশিয়া দীর্ঘ সময় ধরে রোহিঙ্গা-বান্ধব বলেই পরিচিত৷ দেশটিতে এক লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা থাকে, যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটি রোহিঙ্গাদের শরণার্থী স্বীকৃতি দেয় না৷

চলতি বছরের এপ্রিলে করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য রোহিঙ্গাদের দায়ী করা হয়৷ এরপরই রোহিঙ্গাবিরোধী মনোভাব প্রকট হয়ে ওঠে৷ ৩ কোটি ২০ লাখ মানুষের দেশ মালয়েশিয়ার ৭০ ভাগ মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে৷ এ কারণে রোহিঙ্গাবিরোধী মনোভাব ছড়িয়ে দিতে এই প্ল্যাটফর্মকে বেছে নেয়া হয়৷

গত কয়েক মাসে অনেক রোহিঙ্গা চাকরি হারিয়েছেন এবং হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছে মানবাধিকার গ্রুপগুলো৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়টার্সকে জানিয়েছেন তারা সব সময় আতঙ্কে থাকেন, মনে হয় যেকোনো সময় তাদের উপর হামলা হতে পারে৷ অনেক রোহিঙ্গা তাদের ফেসবুক আইডি ডিঅ্যাক্টিভেট করেছেন, কারণ, ফেসবুকে তাদের হুমকি দিয়ে বলা হয় নিজ দেশে ফিরে যেতে৷

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, মালয়েশিয়া সরকার এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে না৷ এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অফিসের কারো সাথে কথা বলতে চেয়ে ব্যর্থ হয়েছে রয়টার্স৷

মালয়েশিয়ার নিরাপত্তাবাহিনীর সাথে যোগসূত্র আছে এমন চারটি পেজ খুঁজে পেয়েছে রয়টার্স, যেগুলো অভিবাসনবিরোধী মনোভাবকে প্রশ্রয় দিচ্ছে৷

মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের সাথেও যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন রয়টার্সের সাংবাদিকরা৷ এপিবি/এসিবি (রয়টার্স)